Money launderers in Police net after duping Jewellery shop সোনা বন্ধকী রেখে টাকা হাতানোর এক চক্র পুলিশের জালে, সাবধান থাকুন
কৌশিক বোস, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা, দুর্গাপুরঃ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৈরী হওয়া নকল সোনার চেন সহ অন্যান্য গহনা অভিনব উপায়ে বন্ধকী রেখে টাকা হাতানোর এক চক্র আপাতত পুলিশের জালে। মুলত স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের উদ্যোগেই ধরা পড়ল নকল সোনার কারবারি চক্রের দুই পান্ডা। ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য শিল্পশহর দুর্গাপুরে। টাকা হাতানোর অভিনব পদ্ধতিতে চোখ কপালে দুঁদে গোয়েন্দাদের।
দুর্গাপুর বেনাচিতির সোনাপট্টিতে একটি সোনার দোকানে,
সোনার চেন জমা দিয়ে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে অভিযোগ
এ যেন ঠিক বলিউডি কোন সিনেমার চিত্রনাট্য, যেখানে নিখুঁত পরিকল্পনায় হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ঘটনার সুত্রপাত গত ২১শে ডিসেম্বর । দুর্গাপুর বেনাচিতির সোনাপট্টিতে একটি সোনার দোকানে তাপস পাল নামক এক ব্যক্তি, সীমা সিং নামক এক মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। সীমা সিং এর আর্থিক সমস্যা রয়েছে বলে দুটি সোনার চেন জমা দিয়ে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত তাপস পাল এই স্বর্ন ব্যবসায়ীর পুর্ব পরিচিত এবং নিজেকে দুর্গাপুর ইস্পাতের ঠিকেদার বলে পরিচয় দিয়েছিল। টাকা নেওয়ার সময় এই দুজনেই নিজেদের ভুল পরিচয় পত্র দিয়ে যায় বলেও অভিযোগ ওই স্বর্ণ ব্যাবসায়ী অমিত কুন্ডুর। পরে স্বর্ণ ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন এই সোনার চেন দুটি নকল।
ভুল পরিচয়পত্র দিয়ে যাওয়ায় খোঁজ পাওয়া যাছিলনা
ভুল পরিচয়পত্র দিয়ে যাওয়ায় খোঁজ পাওয়া যাছিলনা ওই ব্যক্তির , অভিযোগ স্বর্ণ ব্যবসায়ীর। ইতিমধ্যেই অমিত বাবু অন্যান্য স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ঘটনাটি জানান। তক্কে তক্কে ছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। ফের ওই ব্যক্তি রবিবার বিকালে আরও কিছু অলংকার নিয়ে আসেন এবং টাকা চায় ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। তারপরেই অভিযুক্ত নকল সোনা কারবারিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। অভিযুক্ত তাপস পাল স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে জানান এই সোনার চেনগুলি এক মহিলার। এরপর ওই মহিলাকে ডেকে পাঠানো হয়। ওই মহিলাকেও হাতেনাতে ধরে ফেলে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহল। অভিযুক্ত মহিলা সীমা সিং এর বাড়ি সেপকো টাউনশিপে এবং অপর অভিযুক্ত তাপস পাল বি-জোনের আইনস্টাইন এলাকার বাসিন্দা। খবর দেওয়া হয় দুর্গাপুর থানার পুলিশকে। অভিযুক্ত নকল সোনা কারবারিকে সোনাপট্টি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুর্গাপুরের এ- জোন ফাঁড়ির পুলিশ। অভিযুক্তকে ৭দিনের পুলিশি হেফাজত চেয়ে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় সোমবার। মহামান্য আদালত অভিযুক্ত তাপস পালকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং সীমা সিংহকে চোদ্দ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এই চক্রের সাথে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তদন্ত চালাচ্ছে দুর্গাপুর থানার পুলিশ।
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহল। স্বর্ণ ব্যবসায়ী এ্যাসোশিয়েশনের এক সদস্য বিশ্বনাথ দাস অভিযোগ করেন যে এই ধরনের প্রতারনা এই প্রথম নয়। এর আগেও একই ঘটনা বেশ কয়েকবার ঘটেছে। বিশ্বনাথবাবু আরও জানান যে এই ধরনের নকল সোনার কাজ হাওড়া জেলার ডোমজুড়ের দিকে হয়। প্রতারকরা স্বর্ণ ব্যবসায়ীর কোন পরিচিত লোক মারফৎ এই নকল সোনার অলংকার হাত বদল করে টাকা হাতিয়ে নেয়।তাঁর অনুমান , আরও কোন বড় মাথা এই চক্রের সাথে জড়িয়ে আছে , পুলিশ সঠিক তদন্ত করলেই এই প্রতারণা চক্রের পর্দাফাঁস করা সম্ভব বলে মন্তব্য এই স্বর্ন ব্যবসায়ীর।
অন্যদিকে পুলিশের পক্ষে এসিপি ধ্রুবজ্যোতি মুখার্জী জানান যে ধৃত দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেই তাঁরা মুল চক্রের হদিশ পেতে চাইছেন। তবে প্রতারণার সুকৌশলী ধরণ যে পুলিশের কপালে ভাঁজ ফেলেছে , তা বলাই বাহুল্য।