শম্ভুনাথ মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Story of Mental Imbalance at Kulpi শিকল বাঁধা অবস্থায় এক বছর ধরে জীবন কাটছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপি ব্লকের বড় জামতলার বছর ২৬-এর যুবক কৃষ্ণেন্দু দোলুইয়ের। ছয় বছর আগে হঠাৎই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন কৃষ্ণেন্দু। তারপর থেকে দিনমজুর পরিবার তাঁর চিকিৎসা করাতে গিয়ে জমি দোকান বেচে আজ সর্বস্বান্ত। বন্ধ চিকিৎসা। ফলে শিকল বাঁধা অবস্থায় দিন কাটছে যুবক কৃষ্ণেন্দু দোলুইয়ের।
ছেলের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আজ সর্বস্বান্ত দিনমজুর পরিবার Story of Mental Imbalance at Kulpi
আরও পড়ুন : Secondary in 55 years ৫৫ বছরে মাধ্যমিক! নজির গড়লেন রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয়ের গৃহবধূ-ছাত্রী
কৃষ্ণেন্দুর মা রুমা দোলুই জানান, কৃষ্ণেন্দু তাদের একমাত্র ছেলে। ২ মেয়েও রয়েছে পরিবারে। ছোট থেকে লেখাপড়ায় ভালো ছিল ছেলে। তবে ক্লাস এইটের পর দিনমজুর পরিবারে অভাবের সংসারের হাল ধরতে স্কুল ছেড়ে নলকূপ বসানোর কাজে যায় কৃষ্ণেন্দু। এরপরেই ২০১৪ সালের সরস্বতী পুজোর রাতে হঠাৎই ঘুমন্ত অবস্থায় চিৎকার শুরু করে কৃষ্ণেন্দু। তারপর থেকে নিজের মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন বলে জানায় পরিবারের লোকজন। পরে বাবা-মা একমাত্র ছেলের চিকিৎসার জন্য একাধিক চিকিৎসক ও হাসপাতালের দ্বারস্থ হন। চিকিৎসার খরচ মেটাতে বিক্রি করতে হয় জমি ও দোকান। এরপরেও স্বাভাবিক হয়নি ছেলে কৃষ্ণেন্দু দলুই।
শিকল বাঁধা অবস্থায় দিনরাত কাটছে কৃষ্ণেন্দুর Story of Mental Imbalance at Kulpi
মাঝে চার মাস বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে আবার বাড়ি ফেরে কৃষ্ণেন্দু। অন্যদিকে ছেলে যাতে আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক হয় তাই তাঁকে বিয়েও দিয়েছিল বাবা-মা। বিয়ের পর কৃষ্ণেন্দুর আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখেই দুই মাস পর পালিয়ে যায় স্ত্রীও। ছেলের চিকিৎসা করাতে সর্বস্বান্ত পরিবার তাই অগত্যা এক বছর ধরে হাতেপায়ে শিকল বেঁধে রেখেছে। শিকল বাঁধা অবস্থায় এখন দিনরাত কাটছে কৃষ্ণেন্দুর।
প্রতিবেশীরা জানায়, সেভাবে কোনও কিছু করে না কৃষ্ণেন্দু। তবে শিকল খোলা থাকলে মাঝে মধ্যে হঠাৎই বাবা দীনেশ দোলুইয়ের উপর হামলা করে। এর আগে দু’-একবার বাবার উপর আক্রমণও করেছিল। নিজেদের একমাত্র ছেলে যাতে অন্য কোথাও পালিয়ে না যায় তাই চোখের সামনে বেঁধে রাখা। তাই এক বছর ধরে হাতেপায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় দিন কাটছে কুলপির জামতলার বছর ২৬-এর যুবক কৃষ্ণেন্দু দোলুইয়ের। পরিবারের আক্ষেপ যদি কোনওভাবে তাঁদের ছেলের চিকিৎসা হয় তাহলে হয়তো বাঁধনমুক্ত হবে কৃষ্ণেন্দু।
———–
Published by Subhasish Mandal