অনিসা পোদ্দার, আলিপুরদুয়ার, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: অবশেষে ধরা পড়ল হাসিমারা সংলগ্ন ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ে ফ্লাইওভারে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা খুনের অভিযুক্ত। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় নিজের স্ত্রী মজিদা বেগমকে খুন করার ছক কষেন স্বামী এক্রামুল হক। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত শুধু এক্রামুল নন, তার সঙ্গে ছিল বান্ধবী রাহেলা সুলতানাও। মূলত এই ঘটনার পিছনে ছিল ত্রিকোণ প্রেম। এক্রামুলের ওপর পুলিশের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল। এরপর সোমবার কোচবিহারের এক নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই এক্রামুলকে জেরা করে পুলিশ। আর জেরা করতেই সব সত্য পুলিশের সামনে উগড়ে দেয় মজিদার স্বামী। জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে পুলিশকে জানায়, ‘১৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে নিয়ে জয়গাঁ থেকে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে যাওয়ার সময় মাঝ রাস্তায় বান্ধবী রাহেলা গাড়িতে ওঠে। অল্প দূর যেতেই মজিদার গলার নলি কেটে দেয় রাহেলা এবং ঘটনাটিকে ছিনতাই দেখানোর জন্য এক্রামুলের পিঠেও চাকু দিয়ে আঘাত করে রাহেলা।’
ত্রিকোণ প্রেমের জের! স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার স্বামী-সহ প্রেমিকা Husband arrested for murdering wife in Alipurduar
আরও পড়ুন : Arrested for selling shawls with rare species of deer fur চিরু হরিণের লোমের তৈরি শাল! বড়বাজারে ধৃত ৩
রাহেলা সুলতানা মাদারিহাটের বাসিন্দা। সত্য সামনে আসতে রাহেলাকেও তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উল্লেখ্য, এই দম্পতির বাড়ি কোচবিহারের ঘোকসাডাঙা থানার কুশিয়ারবাড়ি গ্রামে। এরমধ্যে মৃত মজিদা বেগম আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এছাড়াও এক্রামুল ও মজিদার একটি সাত বছরের ছেলেও রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার, রাতে হাসিমারার এশিয়ান হাইওয়ে দিয়ে বাড়ি ফেরার পথে হামলার শিকার হন এক্রামুল ও তার স্ত্রী মজিদা। এই ঘটনায় মজিদাকে খুন করার পাশাপাশি তার গয়নাও ছিনতাই হয়েছে বলেও দাবি করা হচ্ছিল। এরপরই জয়গাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়।
‘এটি একটি পরিকল্পিত খুন। অভিযুক্তরা এটিকে ছিনতাই বা ডাকাতি দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন’ Husband arrested for murdering wife in Alipurduar
এ বিষয়ে জেলা সুপার ওয়াই রঘুবংশি জানিয়েছেন, ‘ছিনতাই বা ডাকাতি নয়, এটি একটি পরিকল্পিত খুন। অভিযুক্তরা এটিকে ছিনতাই বা ডাকাতি দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। তবে আমাদের পুলিশ আধিকারিকদের সামনে তারা সত্যকে আর বেশি দিন চাপা রাখতে পারেননি।’ তিনি জানান, ‘গত ৪ দিন ধরে কোচবিহার হাসপাতাল, ঘোকসাডাঙা, বীরপাড়া এবং হাসিমারায় ক্যাম্প করে বিভিন্ন ক্লু সংগ্রহ করেছিল পুলিশ।’
এছাড়াও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুন্তল বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘আমাদের প্রথম থেকেই এক্রামুলের ওপর সন্দেহ ছিল। সেই অনুযায়ী সে নার্সিংহোম থেকে ছাড়া পেতেই তাকে জেরা করা হয়। এরপর সে এবং তার বান্ধবী সব সত্য উগড়ে দেয়। মূলত বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই খুন। তাদের মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার কোর্টে তোলা হয়েছে।’
—–
Published by Subhasish Mandal