মমতা রানি, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা,Do You Have Hair On Your Face মুখের অবাঞ্ছিত লোমের সমস্যা নিয়ে ঝামেলায় আছেন অনেকেই।কারো গালে-চিবুকে-ঠোঁটের ওপরে,কারো আবার কপাল জুড়ে বিচ্ছিরি কালো লোম থাকে। চুল হালকা হলে কিছু যায় আসে না, কিন্তু এই চুলগুলো যখন ঘন চুল বা দাড়িতে রূপ নেয় তখন সেটা বাজে দেখায়।নারীরা অনেকেই বিউটি পার্লারে গিয়ে ব্লিচ বা থ্রেডিং করান।যার কারণে জ্বালা, পোড়া, দাগ, ব্যাথা অনেক কিছু সইতে হয়। আর লেজার পদ্ধতি যথেষ্ট ব্যয়বহুল একটি ব্যাপার। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সৃষ্টি আগরওয়াল এবং চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ইপ্সিতা জোহরি ব্যাখ্যা করেছেন কেন মুখে চুল গজায়।
মুখের চুল কেন বৃদ্ধি পায়
মহিলাদের মুখে চুল গজানোর অবস্থা বেশিরভাগই জেনেটিক। অর্থাৎ পরিবারের কোনো সদস্যের মুখে খুব বেশি চুল থাকলে তা একজন নারীকেও প্রভাবিত করতে পারে। এছাড়া কিছু রোগের কারণেও এই সমস্যা হয়।
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম
একে সাধারণত PCOS বলা হয়। এই অবস্থায়, অন্ডকোষ ফুলে যাওয়া মহিলাদের হরমোনের ভারসাম্যকে ব্যাহত করে। এই সময়ে মহিলাদের মুখে চুল গজাতে শুরু করে। PCOS-এর সময় অনিয়মিত মাসিক, ওজন বৃদ্ধি এবং চুল পড়ার মতো সমস্যাও দেখা দেয়।
পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি
অনেক সময় পুরুষের যৌন হরমোন ‘টেসটোস্টেরন’ শরীরে বাড়তে থাকে। এতে মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশে বেশি লোম গজায়। এই হরমোনের বৃদ্ধিও একজন মহিলার কণ্ঠে ভারীতা সৃষ্টি করতে পারে।
ওষুধের কারণে
হরমোনাল থেরাপি গ্রহণকারী মহিলাদের মধ্যেও মুখের চুলের বৃদ্ধির সমস্যা দেখা যায়। মহিলাদের শরীরে অদ্ভুত চুল গজানোর ঘটনাও রয়েছে।
এনজাইম মধ্যে ব্যাধি
মহিলাদের শরীরে প্রয়োজনীয় এনজাইমের ঘাটতির সময় পুরুষ হরমোন বৃদ্ধি পায়। যার কারণে মহিলাদের চুলের বৃদ্ধির সমস্যা দেখা যায়।
জেনে নিন অবাঞ্ছিত লোম দূর করার সহজ ঘরোয়া কিছু উপায়
ময়দা ও দই এর প্যাক
ময়দা ও দই-এর এই প্যাকটি ত্বকের লোমের রঙের পরিবর্তন করে এবং ওঠার পরিমাণ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। এই প্যাকটি তৈরি করতে লাগবে ২ টেবিল চামচ ময়দা, ১ টেবিল চামচ দই, ১ চা চামচ লেবুর রস ও ১ চিমটি হলুদ গুঁড়ো। একটি বাটিতে এই সব উপাদান নিয়ে খুব ভালো করে মিশিয়ে নিন। খেয়াল রাখবেন মিশ্রণটি যেন খুব পাতলা না হয়। থকথকে ঘন হলে ভালো কাজে দেবে। এরপর মিশ্রণটি মুখে লাগান। বিশেষ করে নাকের নিচে ও থুতনিতে এবং কপালে। শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত মুখে লাগিয়ে রাখুন। তারপর জল দিয়ে ভালো মতো ঘষে মুখ থেকে তুলে ফেলুন। সপ্তাহে ৩/৪ দিন এই প্যাকটি লাগানোর চেষ্টা করবেন। কিছুদিনের মধ্যেই অবাঞ্ছিত লোম দূর হবে।
চিনি ও লেবুর রসের স্ক্রাব
লেবুর রস প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। মুখের লোম দূর করা ও লোমের ঘনত্ব কমাতে লেবুর রসের জুড়ি নেই। চিনি দিয়ে স্ক্রাব করলে ত্বকের রোমকূপ থেকে লোম দূর হতে সহায়তা করে। এই স্ক্রাবটি তৈরি করতে লাগবে ৩ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ জল। প্রথমে সব উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রন তৈরি করুন। ভালো করে মিশিয়ে নেবেন। এরপর এই মিশ্রণ মুখের ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। এরপর মুখ ধোয়ার সময় ভালোভাবে ঘষে তুলুন। এতে লোম দূর হবে। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন এভাবে করুন। দ্রুত মুখের লোম থেকে মুক্তি পাবেন।
কফি স্ক্রাব
কফির স্ক্রাব সব চাইতে বেশী কার্যকরী একটি উপায় মুখের লোমের হাত থেকে রক্ষা পেতে। ক্যাফেইন ত্বকের গভীরে ঢুকে লোম দূর হতে সাহায্য করে। এই স্ক্রাবটি তৈরি করতে আপনার লাগবে ২ টেবিল চামচ কফি, ১ টেবিল চামচ চিনি, ১ টেবিল চামচ মধু ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস। একটি বাটিতে প্রথমে কফি ও চিনি মিশিয়ে নিন। এতে মধু ও লেবুর রস দিয়ে ভালো করে মেশান। কফি ও চিনি পুরো পুরো গলবে না। এরপর এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে খানিকক্ষণ ম্যাসাজ করুন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। ৫ মিনিট ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এরপর জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহারে অনেক ভালো ফলাফল পাবেন।
আরও পড়ুন : কালার করার পরে চুল রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে, যত্ন নেবেন কীভাবে জানুন