শুভাশিস মণ্ডল, কলকাতা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Questions about the leadership of Gandhi family ১০ মার্চ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর ফের কঠিন সময়ের মুখোমুখি হচ্ছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। গান্ধি পরিবার ছাড়া অন্য কাউকে কংগ্রেসের পুনরুজ্জীবনের জন্য দলের নিয়ন্ত্রণ তুলে না দেওয়াকে কেন্দ্র করে আবারও জোরালো দাবি উঠছে। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কপিল সিবাল সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সিনিয়র নেতাদের কাছে পৌঁছাতে বা পার্টিকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তাঁদের সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেনি কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সিবাল। পাশাপাশি সূত্র মারফত এটাও জানা যাচ্ছে যে, আগামীকাল কপিল সিবালের বাড়িতে নৈশভোজে মিলিত হচ্ছেন জি-২৩ নেতারা। রাজনৈতিক মহল অবশ্যই এই বৈঠকের দিকে নজর রাখছে বলাই যায়।
২০১৪ সাল থেকে দলকে একত্রিত রাখাটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াচ্ছে Questions about the leadership of Gandhi family
কপিল সিবাল ক্ষোভ উগরে দিয়ে আরও বলেছেন যে, ‘২০১৪ সাল থেকে একের পর এক নির্বাচনে দল পরাজয়ের মুখোমুখি হচ্ছে এবং রাজ্যের পর রাজ্য হারাচ্ছে। নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ নেতারাই কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। দলকে একত্রিত রাখাটাই চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকেই ১৭৭ জন সাংসদ-বিধায়ক এবং ২২২ জন প্রার্থী কংগ্রেস ছেড়ে বেরিয়ে গেছে। এমনকী ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকে দলের দায়বদ্ধতা এবং গ্রহণযোগ্যতার অভাব দেখা দিয়েছে। ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নগণ্য প্রচেষ্টা করা হয়েছে।’
যদি এখনও ‘চিন্তন শিবির’ দরকার হয়, তাহলে নেতৃত্ব কোকিলের দেশে বাস করছে Questions about the leadership of Gandhi family
সোমবার অনুষ্ঠিত কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডব্লিউসি) সভা সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিবাল বলেছেন যে, ‘লোকসভা নির্বাচনে দল হেরে যাওয়ার আট বছর হয়ে গেছে। কী ভুল হয়েছে তা খুঁজে বের করার জন্য নেতৃত্বের যদি এখনও ‘চিন্তন শিবির’ দরকার হয়, তাহলে নেতৃত্ব কোকিলের দেশে বাস করছে।’ তিনি বলেন, ‘যখন কংগ্রেস গঠিত হয়েছিল, তখন প্রতিষ্ঠাতা হিন্দু ছিলেন না। সবাই এক ছাতার নীচে এসেছিলেন এবং ক্ষমতা কাঠামো সংগঠিত হয়েছিল। প্রতি বছর পরিবর্তন হত প্রেসিডেন্ট। সম্প্রতি এটি দীর্ঘ মেয়াদি হয়েছে আমাদের।’ কপিল সিবাল দাবি করেন সিডব্লিউসি-তে কিছু বিশিষ্ট নেতারা মনে করেন গান্ধি ছাড়া কংগ্রেস ‘সত্যিকারভাবে’ বাঁচবে না। তবে, তিনি এবং অন্যান্য অনেক নেতাই এই অনুভূতির সাথে একমত নন। সিবাল উল্লেখ করেছেন যে কিছু নেতা নেতৃত্বকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন যে পার্টির প্রক্রিয়াগুলিতে সংস্কার প্রয়োজন, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে না হলে টেকা যাবে না।
অতীতে সবধরনের ইস্যুগুলিকে নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হত Questions about the leadership of Gandhi family
কংগ্রেস নেতৃত্ব কারও সঙ্গে কথা বলে না বলে দাবি করেছেন কপিল সিবাল। তিনি বলেন, ‘এমন একটা সময় ছিল যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে সিনিয়র সদস্যদের বক্তব্য শোনা হত। অতীতে সবধরনের ইস্যুগুলিকে নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হত। এখন এসব কিছুই হয় না। শুধু আমি নই, নেতৃত্ব গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, পৃথ্বীরাজ চৌহান, ভূপিন্দর হুডা, শশী থারুর, মনীশ তেওয়ারি এবং রাজ বব্বরের মতো নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেনি। কংগ্রেস সংবিধানের বিধানগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ন্যূনতম সংস্কারগুলি গ্রহণ না করায় এবং কোনও কথা যদি শোনা বা মেনে নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা কীভাবে মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করব?’
রাহুল দলের সভাপতি নন, তবুও সব সিদ্ধান্তই তিনি নেন Questions about the leadership of Gandhi family
পঞ্জাবে কংগ্রেসের ভরাডুবি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কপিল সিবাল আরও বলেন, ‘রাহুল গান্ধি পঞ্জাবে গিয়ে চরণজিৎ সিং চান্নি মুখ্যমন্ত্রী হবেন ঘোষণা করেছেন। তিনি কোন ক্ষমতায় এটা করেছেন? তিনি তো দলের সভাপতি নন! যদিও সব সিদ্ধান্তই তিনি নেন। তিনি ইতিমধ্যেই ডি ফ্যাক্টো প্রেসিডেন্ট। তাহলে কেন তারা তাঁকে ক্ষমতার লাগাম ফিরিয়ে নিতে বলছে?’
‘ঘর কি কংগ্রেস’ নয়, ‘সব কি কংগ্রেস’ দরকার Questions about the leadership of Gandhi family
কপিল সিবাল বলেছেন যে তিনি ‘ঘর কি কংগ্রেস’ (Ghar ki Congress)-এর পরিবর্তে ‘সব কি কংগ্রেস’ (Sab ki Congress) চান। তিনি বলেন, ‘আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত ‘সব কি কংগ্রেস’-এর জন্য লড়াই করব। এই ‘সব কি কংগ্রেস’ মানে ভারতের সেই সমস্ত লোকদের একত্রিত করা যারা বিজেপিকে চায় না।’
Questions about the leadership of Gandhi family
————
Published by Subhasish Mandal