ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা
Anish Khan Death
কলকাতা: বানতলার চম্পলা সরদার থেকে রিজওয়ানুর রহমান হয়ে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম ঘুরে নেতাই। বাম আমলে বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলেই ‘সিবিআই চাই, সিবিআই চাই’ দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সময়ে তিনি ছিলেন রাজ্যের বিরোধী নেত্রী।
কিন্তু মাত্র এক দশকের ব্যবধানে তাঁর অবস্থান সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। আজ সিবিআইয়ের কথা বললেই তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছেন তিনি। বলছেন, সিবিআই নাকি অজস্র মামলা হাতে নিয়ে ফেলে রেখেছে। কোনও নিষ্পত্তি হয়নি। এক্ষেত্রে তৃণমূলনেত্রীর ভূমিকাটা শুধু বদলে গিয়েছে। সেদিনের বিরোধী নেত্রী আজ বাংলার মসনদে, মুখ্যমন্ত্রী।
রিজওয়ানুর রহমানের মৃত্যুতে অভিযোগ উঠেছিল কলকাতা পুলিশকে ব্যবহার করে তাঁর উপর প্রবল মানসিক চাপ তৈরি করেছিল টোডি পরিবার। সেই কারণেই সম্ভবত আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় সে।
এক্ষেত্রে সিবিআই চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি খুব পরিষ্কার ছিল, যে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা কি করে রিজওয়ানুর মৃত্যু রহস্যের সঠিক তদন্ত করবে। শেষ পর্যন্ত সিবিআই তদন্তই হয়।
যদিও তদন্ত শেষে সিবিআইয়ের সুপারিশ মানতে চাননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ ততদিনে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন। তাই এই ঘটনায় এক্তিয়ার বহির্ভূত আচরণের জন্য সিবিআই পুলিশ অফিসার জ্ঞানবন্ত সিংয়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকারকে বিভাগীয় পদক্ষেপ করার পরামর্শ দিলেও তা করেনি মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। আর সেই জ্ঞানবন্ত সিংকে দিয়েই আনিস খান মৃত্যু রহস্যের তদন্ত করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। সত্যিই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কতটা বদলে যায়!
এক্ষেত্রে শুধু মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকাই নয়, পুলিশের ভূমিকাতেও বড়োসড়ো ফারাক আছে, যা রিজওয়ানুর কাণ্ডের সঙ্গে আনিস খানের বিষয়টিকে অনেকটাই আলাদা করে দিচ্ছে। এক্ষেত্রে পুলিশের বিরুদ্ধেই আনিসকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে এবং রাজ্য সরকার একরকম ঠারে ঠারে মেনে নিয়েছে যে পুলিশের জড়িত থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেওয়ার নয়।
এখানেই প্রশ্ন, যে পুলিশ অভিযুক্ত তারই শীর্ষকর্তাদের নিয়ে সিট গঠন করে কি করে নিরপেক্ষ তদন্ত করা সম্ভব?মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই নিয়ে যে কথা বলছেন তা উড়িয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে তিনি আদালতের তত্ত্বাবধানে সিবিআই তদন্তের পক্ষে মত দিতেই পারেন। কারণ কোথাও একটা গিয়ে আপনাকে রাজি হতেই হবে, না হলে তো তদন্ত প্রক্রিয়াই বন্ধ হয়ে যাবে!
এক্ষেত্রে সিট বা সিবিআই তদন্তে আপত্তির কারণ হল, খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত রাজ্য পুলিশ। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের ভূমিকা হল, অভিযুক্তের পরিবারের কর্তাকে দিয়েই তার দোষ খোঁজা হচ্ছে! এটা পুরোপুরিভাবে ন্যায়বিচারের পরিপন্থী