How to control uric acid ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া প্রতিকার
মুক্তা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা, কলকাতা : কেউ টম্যাটো খান না, তো কেউ ঢ্যাঁড়শ, অনেকে আবার পিকনিকে গিয়ে শুকনো মুড়ি চিবিয়ে কাটান। জিজ্ঞাসা করলে একটাই উত্তর— ইউরিক অ্যাসিড আছে। বিশ্বের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ এই কারণে কষ্ট পাচ্ছেন।সত্যিই কি ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে কড়া নিয়ম মেনে চলা বাধ্যতামূলক? এটা জেনে রাখা ভালো, খাওয়া কমালেই ইউরিক অ্যাসিড কমে না। খাবার হজমের সময় ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়। এটা মূত্রের স্বাভাবিক উপাদান। মাত্রাতিরিক্ত প্রোটিন খেলে বা ওজন বাড়লে কখনও কখনও ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়।
ইউরিক অ্যাসিড অর্থাৎ জয়েন্টে ব্যথা আজকাল সাধারণ ব্যাপার। প্রায়শই ৩০ বছরের বেশি বয়সী লোকেরা এই সমস্যার সাথে লড়াই করে। এটি শরীরে পিউরিক অ্যাসিডের ভাঙ্গনের কারণে হয়। যা রক্ত সঞ্চালন থেকে কিডনিতে পৌঁছে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে বের হয়ে যায়। শরীরে এর পরিমাণ বেড়ে গেলে বাতের রোগ হয়। এর লক্ষণগুলি সনাক্ত করা এবং সঠিক সময়ে চিকিত্সা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ইউরিক অ্যাসিডের লক্ষণ
• হাত এবং পায়ে অসাড়তা
• সংযোগে ব্যথা
• অঙ্গ ফুলে যাওয়া
• উঠতে বসতে সমস্যা
ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির কারণ
১. খাবারে পুষ্টির অভাবে ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে শুরু করে।
২. অতিরিক্ত ওষুধ সেবনের কারণেও এই সমস্যা হতে পারে।
৩. অতিরিক্ত প্রোটিন খাওয়ার ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে।
৪. ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের অভাবেও শরীরে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয়।
ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণের ঘরোয়া উপায়
১ আখরোটে রয়েছে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম, প্রোটিন, আয়রন ইত্যাদি, যা স্বাস্থ্য ভালো রাখে। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ২-৩টি আখরোট খেলে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. এক চা চামচ মধুতে অশ্বগন্ধা গুঁড়ো মিশিয়ে নিন। তারপর হালকা গরম দুধ দিয়ে খান। এটিও অনেক উপকার দেবে, তবে মনে রাখবেন, এটি অল্প পরিমাণে খাওয়া উচিত।
৩. ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলে তা পিণ্ডের মতো শরীরে জমতে শুরু করে এবং দ্রুত শরীরের বাকি অংশে ছড়িয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় ১ গ্লাস জলে ১ চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে পান করলে শরীরে তৈরি হওয়া পিণ্ড খুলে যায় এবং ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমে যায়।
৪. ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের বেশিরভাগেরই গাউটের সমস্যা থাকে। এটি প্রতিরোধ করতে, সকালে খালি পেটে বেথুয়া পাতার রস পান করুন। মনে রাখবেন জুস পান করার পর ২ ঘণ্টা অন্য কিছু খাবেন না।
৫. প্রতিদিন বিটরুট এবং আপেলের রস পান করুন। এটি শরীরের পিএইচ লেভেল বাড়ায় এবং ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখে। এগুলো ছাড়াও গাজরের জুসও উপকারী।
৬. বেশি বেশি জল পান করুন কারণ এটি প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরের বর্ধিত ইউরিক অ্যাসিডকে বের করে দেয়। এ ছাড়া সঠিক পরিমাণে জল খেলে শরীরে শক্তি বজায় থাকে।
৭. ইউরিক অ্যাসিডে ভিটামিন সি খুবই উপকারী। ডায়েটে লেবু অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করুন। এছাড়াও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল অবশ্যই খাবেন।
৮. স্থূলতার কারণে শরীরে চর্বি জমে। যার কারণে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। তবে মনে রাখবেন ওজন কমাতে একবেলা খাবার না খেয়ে থেকে ধীরে ধীরে চেষ্টা করুন।
৯. নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এ জন্য হাঁটা বা সাঁতার বেছে নিতে পারেন। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, হৃদরোগ থাকলে ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ফলে সবসময় নিজের শরীরের প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত।
১০. অলিভ অয়েল আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারি। আপনি আপনার খাবারে অলিভ অয়েল ব্যবহার করার মাধ্যমে ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। ভিটামিন ই প্রচুর পরিমাণে অলিভ অয়েলে পাওয়া যায় যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হ্রাসে সহায়ক।
১১. জোয়ান ইউরিক অ্যাসিড হ্রাস করার জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি ।এটি রক্তে ক্ষারীয় স্তর নিয়ন্ত্রণ করে প্রদাহ হ্রাস করতে সহায়তা করে।
ইউরিক অ্যাসিডের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত জিনিসগুলি এড়িয়ে চলুন
১. বেশি প্রোটিন যুক্ত খাদ্য এড়িয়ে চলুন
২. বেকারি পণ্য খাবেন না
৩. অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকুন
৪. টিনজাত খাবার খাবেন না
৫. মাছ-মাংস থেকে দূরে থাকুন
আরোও পড়ুন : উচ্চ রক্তচাপের ঘরোয়া প্রতিকার