ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা
সৌম প্রামাণিক, পূর্ব মেদনীপুর: রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী তাপস কুমার মাঝিকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। রক্তাক্ত জখম শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসাধীন। তাপস কুমার মাঝি পটাশপুর ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি ও প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিও বটে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদান করার পরে তাপস মাঝিকে সমস্ত পদ থেকে সরিয়ে দেয় শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।ভোটের পর তৃনমূল কংগ্রেস থেকে বহিস্কার করে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এছাড়াও তিনি পটাশপুর বাড়শঙ্কর প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক। ওই শুভেন্দু অধিকারী অনুগামীকে বেধড়ক মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি এই ঘটনার সঙ্গে তারা কোনোভাবেই যুক্ত নয়। জনরোষের শিকার হয়েছেন।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার দুপুরে পটাশপুর ১ ব্লকের ব্লক অফিসে গিয়েছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি তাপস মাঝি। ঠিক ওই সময় তাপস মাঝিকে ঘিরে ধরে তৃণমূল আশ্রিত দুস্কৃতিকারীরা বলে অভিযোগ। তাপস বাবুর বাইক ভাঙচুর করা হয় ও বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। প্রাক্তন তৃনমূল নেতার মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে পটাশপুর থানার পুলিশ। রক্তাক্ত জখম তাপস মাঝিকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ আসার পরে দুস্কৃতিকারীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়।
প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের বিরুদ্ধে জনতা শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী তাপস মাঝি বলেন ” দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে আমি রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছি। আমাকে মারধর করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। যারা মারধর করেছে তাদেরকে আমি প্রত্যেককে পরিচিত।পরিকল্পিত ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে ব্লক সভাপতি পীযূষ পণ্ডা নেতৃত্বে আমাকে মারধর করা হয়েছে। আমাকে মারতে মারতে ব্লক ক্যাম্পাস থেকে পাকা রাস্তায় নিয়ে আসা হয়, তারাই বলছিল পীযূষ পণ্ডা এলেই ছাড়বো। আমি একজন পেশায় শিক্ষক। সেই শিক্ষকতায় কাজেই ব্লক অফিসে গিয়েছিলাম। কাজ শেষ করে ফেরার পথে বেধড়ক মারধর করে। আমার চশমা ভেঙে দেয়। পাশাপাশি আমার কাছ থেকে সমস্ত নথি ছিনিয়ে নেয়। আমার বাইকে ভাঙচুর চালিয়েছে। তারা জানায় আপনি কেন বিজেপিকে ভোট দিতে বলেছেন। আমি তখন বলি ৮ মাস রাজনীতি থেকে বাইরে রয়েছি। এখনো পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগদান করিনি। তিনি আরো কটাক্ষ করে বলেন ” এখন যারা তৃণমূল কংগ্রেসের বড় বড় চেয়ারে বসে রয়েছেন। তারা বিগত দিনে আমার হাত ধরে রাজনীতিতে এসেছেন। আমরা সবাই শুভেন্দু অধিকারী অনুগামী ছিলাম। পীযূষ পণ্ডা শুভেন্দু অধিকারী ফ্যান ক্লাব করেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী কে আমি শ্রদ্ধা করি, আগামী দিনেও শ্রদ্ধা করবো। উনার কাছ থেকে আমি রাজনীতিতে শিখেছি “।
আর ও পড়ুন :করোনা আবহে পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন
এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে পটাশপুর ১ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি পীযূষ পণ্ডা। তিনি বলেন ” এই ঘটনার সঙ্গে শাসকদল কোনভাবেই যুক্ত নয়। তিনি জনরোষের শিকার হয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও ব্লক তৃণমূল নেতা থাকাকালীন এলাকার মানুষের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করেছে। তাই এলাকার মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে চড়াও হয়েছে। তিনি এখন সাধু হওয়ার চেষ্টা করছেন। এলাকার মানুষ সবই জানে “।
পটাশপুর থানার ওসি দীপক চক্রবর্তী বলেন ” এখনো পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে। যদিও এ বিষয়ে বেশি কিছু মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি “।