রণজিৎ দাস, মালদা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: এফআইআর হওয়ার পর তিন মাস পার হলেও অধরা বন্যা ত্রাণে দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান। শাসকদলের ফেরার প্রধানকে ধরতে এক মাস আগে হুলিয়া জারি করেছিল আদালত। পুলিশ মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে আদালতের সেই নির্দেশ ঝুলিয়ে এসেছিল। এক মাসের মধ্যে ধরা না দিলে তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছিল সেই নির্দেশে। কিন্তু তারপরেও প্রধান অধরা থাকায় এবার ফেরার প্রধানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করল পুলিশ। বুধবার ফেরার প্রধানের বাড়ি থেকে ওয়াশিং মেশিন, টিভি, আলমারি ও কিছু মূল্যবান সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পাশাপাশি আর কোথায় কী কী স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে তার খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ।
হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, ‘বাড়িতে, লাগোয়া বিহার ও একাধিক জায়গায় হানা দিলেও প্রধানের খোঁজ মেলেনি। বিষয়টি আমরা আদালতে জানাই। আদালতের নির্দেশ মেনেই আমরা কাজ করছি’।
তিন মাসেও অধরা! দুর্নীতিগ্রস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত পুলিশের Property of Panchayat Pradhan confiscated in Malda
জানা গিয়েছে, ২০১৭ সালে মহকুমাজুড়ে ভয়াবহ বন্যা হয়। বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষতিগ্রস্ত হন ৭ হাজার ৩৯৪ জন। কিন্তু তালিকায় নাম থাকলেও তাঁরা টাকা পাননি বলে দুর্গতদের অনেকেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হন। দুর্গতদের টাকা ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তদন্তে নেমে জানতে পারে প্রশাসন। কিন্তু প্রশাসন পদক্ষেপ করছে না বলে আদালতে মামলা করেন পঞ্চায়েতের বিরোধী কংগ্রেস দলনেতা আব্দুল মান্নান। তারপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।
তদন্তে নেমে ৭৬ লক্ষ লুটের বিষয়টি সামনে আসতেই প্রধানের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন বিডিও। পরে একই অভিযোগে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস, কংগ্রেসের বিরোধী দলনেত্রী (বর্তমানে তিনি তৃণমূলে) সুজাতা সাহা, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য রৌশনারা বিবি ও কয়েকজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করে প্রশাসন। এর মধ্যে সুজাতা জামিন পেয়েছেন। তাঁর স্বাক্ষর জাল করা হয়েছিল বলে সুজাতা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন সভাপতি কোয়েল দাসও। দুর্নীতির ঘটনায় কোয়েলের নাম ছিল এক নম্বরে। তিন নম্বরে রয়েছেন রৌশনারা। তাঁর অবশ্য জামিন মেলেনি। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন জানিয়েও প্রশাসন সভাপতিকে বাঁচাতে সচেষ্ট কিনা সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
—–
Published by Subhasish Mandal