কৌশিক বোস, দুর্গাপুর ও সৌমেন্দু দে, বীরভূম, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Joydev Kenduli Mela 2022 আজ থেকে শুরু হল জয়দেব-কেঁদুলির মেলা। প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো এই মেলা কোভিড আবহে জৌলসহীন। যেখানে এদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ গঙ্গাসাগর মেলায় হাজির হল, সেখানে নামমাত্র উপস্থিত জয়দেব মেলায়। গঙ্গাসাগর মেলা সুপার স্প্রেডার হতে পারে আশঙ্কায় ভুগছে তামাম চিকিৎসকমহল, সেখানে অনেকটাই স্বস্তিদায়ক চিত্র এই প্রাচীন মেলার।
বর্ধমান-বীরভূমের অজয় নদ তীরবর্তী জয়দেব-কেঁদুলি মেলায় মকর সংক্রান্তিতে শাহী স্নানের রেওয়াজ প্রথম থেকেই। কিন্তু এবার কোভিডের তৃতীয় ঢেউ যখন মধ্যগগনে, তখন নামমাত্র মেলার আয়োজন প্রশাসনের। এই মেলার মুখ্য আকর্ষণ এখানকার আখড়া ও বাউল কিংবা কীর্তন গানের জমাটি আসর। সেকারণে এই মেলা ‘বাউল মেলা’ বলেও খ্যাত। যা দেখতে ও শুনতে ভীড় জমান লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু এবার আখড়া না থাকায় বাউল-কীর্তনের আসরেও ভাটা, ফলে মানুষের ভীড় নেই বললেই চলে। কিছু সাধুসন্ত এসেছেন বটে, কিন্তু মন্দিরে ভোগের পরই চলে যাবেন বলে জানালেন। পুরুলিয়ার মানবাজারের বামনি গ্রাম থেকে এসেছেন চিত্রদাস মহন্ত। জানালেন গত ১৬ বছর ধরে আসছেন এই মেলায়। এবার একেবারেই হাল্কা মেলার ভীড়, ফলে গুরুঠাকুরের ভোগ-আরতির পরেই চলে যাবেন তিনি।
করোনা আতঙ্কে জৌলসহীন জয়দেব-কেঁদুলির মেলা Joydev Kenduli Mela 2022
আরও পড়ুন : Gangasagar Mela 2022 মকর সংক্রান্তির সকালে সাগরে পুণ্যস্নান, উধাও কোভিডবিধি
এবারের মেলা প্রথম থেকেই করোনার কারণে হবে না এটাই ঠিক ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত মেলার পক্ষে যায়। এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের বস্ত্রমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা জানান, ‘অন্যবারের মতো বিশাল আকারে মেলা না হলেও ছোট করে জয়দেবের মেলা বসবে।’ মেলায় বেশ কিছু খাবারের দোকান করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অল্পকিছু আখড়াও খোলা রাখার জন্য প্রশাসনকে বলা হয়েছে। যেখানে বাইরে থেকে আগত সাধু-আউল-বাউল-ফকিররা বিশ্রাম নেবে। তিনটে স্নানের ঘাটে দিনে তিনবার করে স্যানিটাইজেশন করা হচ্ছে। পুণ্যার্থীদের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট দেখে তবেই মেলায় প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি দুটি স্বাস্থ্য ক্যাম্প করা হয়েছে, যেখানে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকছে। এদিন ভোরে গুটি কয়েক মানুষকে অজয় নদে স্নান করতে দেখা গেল। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোভিডবিধি মেনে সব রকম আয়োজনই করা হয়েছে। এদিন সকালে এসিপি (কাঁকসা-বুদবুদ)শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ কাঁকসা থানার আধিকারিক, মলানদিঘি ফাঁড়ির ইনচার্জ ও অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকগণ মেলা প্রাঙ্গণ ও নদীর ঘাট পরিদর্শন করেন। তবে এত কিছু সরকারি ব্যবস্থার পরেও কোথায় যেন চিরপরিচিত জয়দেব-কেঁদুলির মেলা আজ জৌলসহীন।
——-
Published by Subhasish Mandal