সঞ্জিত সেন, পূর্ব বর্ধমান, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: গত পাঁচ ছয় দিন ধরে গলসির পুরসা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে এক ভবঘুরে। তখন থেকে হাসপাতালে চলছে তাঁর সারা দিনের খাওয়াদাওয়া। ভবঘুরের মলিন বসন খুলে পয়পরিষ্কার করিয়ে নতুন জামাকাপড় পরিয়ে পরিপাটি করিয়েছেন হাসপাতালের বিএমওএইচ, স্বাস্থ্যকর্মী এবং স্থানীয় এক দোকানদার। কোভিড আবহে এক মানবিকতার নজির গড়ল বর্ধমান।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল কর্মী সেখ সাহেব ও জাকির মির ভবঘুরেকে প্রথম শীতে কাঁতরাতে দেখে একটি চাদর দেন রাতে ঘুমানোর জন্য। তারপর থেকে হাসপাতালের বিশ্রাম ভবনই ঠিকানা হয়েছে ওই ভবঘুরের। নিজের নাম বলেছেন বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের গোবিন্দনগরে বাড়ি। তবে তাঁর বাবা-মা নেই। বাড়িতে আছেন দাদা, বউদিরা। হেঁটে হেঁটেই এখানে চলে এসেছে। জানিয়েছেন, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনাও করেছেন তিনি।
পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালের গোবিন্দনগরে বাড়ি ভবঘুরে বিশ্বনাথের Humanity at Burdwan Pursa Hospital
আরও পড়ুন : Earthquake In Northeast ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তর-পূর্ব ভারত
সোমবার গলসির পুরসা হাসপাতালের বিএমওএইচ ফারুক হোসেন ওই ভবঘুরেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘুরতে দেখে তাঁর নোংরা জামাকাপড় খুলে সাবান, শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানোর ব্যবস্থা করেন। হাসপাতালে কর্মী সেখ সাহেব, বিনা হাজরা, গাড়িচালক রাজ মির, অ্যাম্বুলেন্স চালক সাবির আহম্মেদ ও হাসপাতালের গেটে চা দোকানদার লাল্টু মণ্ডলরা সমবেত ভাবে স্নান করিয়ে তেল মাখিয়ে দেন ভবঘুরেকে। তারপর নতুন জামাকাপড় ও শীতবস্ত্র পরিয়ে দেন তাঁরা। বিএমওএইচ ফারুক হোসেন কেভিড টেস্টও করিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অর্থ প্রদান করেছেন জামাকাপড় ও শীতবস্ত্র কেনার।
অ্যাম্বুলেন্স চালক সেখ সাবির জানিয়েছেন, ভবঘুরে বিশ্বনাথ ঠিকঠাক কথা বলতে পারেন। সবসময় তাঁর খবর নেওয়া হয়। হাসপাতালের আয়ামাসি বিনা হাজরারা দুবেলা খাবারের ব্যবস্থাও করেন। এছাড়াও হাসপাতালের কর্মীরা এবং হাসপাতালের গেটের বাইরে এক দোকানদার খাবার দিয়ে সহযোগিতা করেন বিশ্বনাথকে। আয়ামাসি বিনা হাজরা চান, বিশ্বনাথ বাড়ি ফিরে যাক। বাড়ির লোকেরা বর্ধমানের গলসির পুরসা হাসপাতালে এসে নিয়ে যাক নিখোঁজ বিশ্বনাথ চক্রবর্তীকে।
—–
Published by Subhasish Mandal