কৌশিক বোস, দুর্গাপুর, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Farmer of Durgapur শীতকালের সবজি মানেই ফুলকপি ও বাঁধাকপি। তবে ওই সবজির একঘেয়েমি কাটাতে রংবেরঙের ফুলকপি ও বাঁধাকপি ফলিয়ে তাক লাগিয়েছেন দুর্গাপুরের কৃষক অভিজিৎ চক্রবর্তী। আকর্ষণীয় হলুদ রঙের ফুলকপি, বেগুনি রঙের ফুলকপি ও ব্রোকলি (ফুলকপি প্রজাতির, সবুজ রঙের) দেখতে দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপে তাঁর জমিতে ভিড় জমাচ্ছেন কৌতূহলী মানুষরা। পাশাপাশি স্থানীয় বাজারে ওই ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাহিদাও বেড়েছে। শীতকালে টানা কয়েকমাস ধরে ফুলকপি, বাঁধাকপি খাওয়ার পর অনীহা কাটাতে চড়া দামে হলেও শহরবাসী কিনছে ওই রংবেরঙের ফুলকপি ও বাঁধাকপি। দুর্গাপুরের বাজারে এই প্রথম দেখা মিলল রংবেরঙের ফুলকপির। এর আগে দুর্গাপুরের কোনও বাজার বা মলগুলিতেও কখনও এরকম কপির দেখা মেলেনি।
দাম চড়া হলেও নতুনত্ব রঙের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বেশ আকর্ষণীয় এবং অনেক বেশি সুস্বাদু। কৃষক অভিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের নিজস্ব কোনও জমি নেই। ডিএসপির পতিত জমিতে বাবা দীর্ঘদিন ধরে চাষাবাদ করে আসছেন। তাঁর সঙ্গে আমিও ছোটো থেকে চাষবাসে যুক্ত। বাবা গত হওয়ার পর থেকে পরিবারে মা, দাদা, বউদি, ভাইঝি-সহ প্রায় ৮ জন মিলে প্রায় এক একর জমিতে চাষবাস করে জীবনজীবিকা নির্বাহ করি। দীর্ঘ ৭ বছর ধরে সবরকমের সবজি চাষ করছি। শীতকালীন সবরকম সব্জি চাষ করি। তার মধ্যে ব্রোকলি চাষ করে সাফল্য মিলেছে। এই বছর নতুন সবজি হিসেবে হলুদ রঙের ফুলকপি ও বেগুনি রঙের বাঁধাকপি ফলিয়েছি। এই জাতীয় ফুলকপি নেদারল্যান্ড ও ফ্রান্সে হয়।
রংবেরঙের কপি ফলিয়ে তাক লাগিয়েছেন দুর্গাপুরের চাষি Farmer of Durgapur
আরও পড়ুন : Drinking water problem in Nadia কল আছে, জল নেই! পুকুরের নোংরা জলই ভরসা পানিঘাটা গ্রাম পঞ্চায়েতে
তিনি আরও জানান, দুর্গাপুরের এক শস্যবীজ বিক্রেতা আমাকে এই ফুলকপি চাষ করার পরামর্শ দেন। তাঁর পরামর্শ মতো আমি এই বছর দেড় হাজার হলুদ ফুলকপি, এক হাজার কমলা রঙের ফুলকপি, তিন হাজার ব্রোকলি ও তিন হাজার বেগুনি বাঁধাকপি চাষ করেছি। গত দুমাস আগে চারা লাগিয়েছিলাম। এখন সব গাছে ফলন শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণ ফুলকপি ও বাঁধাকপি উৎপাদনের চেয়ে এই ফুল ও বাঁধাকপি ফলানোর খরচও দ্বিগুণ। প্রায় প্রতি গাছ পিছু ১০ টাকা করে খরচ হয়ে যায়। পাইকারি বাজারে তেমন মুনাফা হচ্ছেনা। অথচ খুচরো সবজি ব্যবসায়ীরা হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপিগুলি এক একটি ৫০-৬০ টাকা করে বিক্রি করছেন। আর বাঁধাকপিগুলি এক একটি ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করছেন। রঙের নতুনত্ব থাকায় ও সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। এই সময় ১০ থেকে ২০ টাকায় বিকোচ্ছে সাধারণ ফুল ও বাঁধাকপি। দুর্গাপুরে ব্রোকলি ও বেগুনি বাঁধাকপির কয়েকবছর আগেই চাহিদা শুরু হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এই প্রথম হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি দেখে দুর্গাপুরের মানুষের কৌতূহল বাড়ছে। এই কপি কেবল টাউনশিপের চণ্ডীদাস বাজারে দিচ্ছি। ওই বাজারে এত বেশি চাহিদা যে এখনও বেনাচিতি বাজার-সহ অন্যান্য বাজারে নিয়ে যেতে পরিনি। আগামী বছর আরও বেশি করে চাষ করব শহরবাসীর চাহিদা মেটাতে। আপাতত দুর্গাপুরের মানুষের রসনা তৃপ্ত করতে সুপারহিট হলুদ ও বেগুনি ফুলকপি।
—–
Published by Subhasish Mandal