Friday, November 8, 2024
Homeরাজ্যপশ্চিম বর্ধমানChaos at Durgapur Hospital দুর্গাপুরের হাসপাতালে পুলিশের 'দাদাগিরি'! আইসিইউ থেকে দেহ তুলে...

Chaos at Durgapur Hospital দুর্গাপুরের হাসপাতালে পুলিশের ‘দাদাগিরি’! আইসিইউ থেকে দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

কৌশিক বোস, দুর্গাপুর, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : হাসপাতালে ঢুকে পুলিশের দাদাগিরি। মৃত তৃণমূলকর্মীর দেহ হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিটে ঢুকে জোর করে বাইরে বের করে আনার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। আর এই ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে গেল দুর্গাপুরের বামুনারার এক বেসরকারি হাসপাতাল চত্বরে। আইসিইউ ইউনিটে ঢুকে কেন মৃতদেহ এইভাবে বের করে আনছেন– প্রশ্ন তোলাতে কাঁকসা থানার অধীন মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশ উল্টে হাসপাতালের তিনকর্মীকে তুলে নিয়ে চলে যায় কাঁকসা থানাতে। একইসঙ্গে মেডিক্যাল এথিক্স না মেনে এক্কেবারে আইসিইউ ইউনিটের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট থেকে জোর করে মৃতদেহ হাসপাতালের বাইরে বের করে নিয়ে এসে পুলিশ গাড়িতে তুলে নেয়। রীতিমতো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চমকে ধমকে এই দাদাগিরি করে মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশ।

মেডিক্যাল এথিক্স ভাঙার অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে Chaos at Durgapur Hospital 

উর্দি ছাড়াই পুলিশের এই দাদাগিরিতে প্রথমটা হকচকিয়ে যান বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের প্রশ্ন কীভাবে মেডিক্যাল এথিক্স ভেঙে দুপুর বারোটায় যে রোগী মারা যায় চার ঘণ্টার আগেই কীভাবে সেই রোগীকে হাসপাতাল থেকে পুলিশ দাদাগিরি করে জোর করে বের করে নিয়ে চলে যায়, কারণ হিসেব মতো চার ঘণ্টা পরই মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু হয়। এইভাবে চলতে থাকলে হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বেসরকারি ওই হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডা. অভিষেক চ্যাটার্জি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়ার আশ্বাস দেন দুর্গাপুর পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার।

সিসিটিভিতে বন্দি মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশের ‘দাদাগিরি’  Chaos at Durgapur Hospital 

সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে বাঁকুড়ার জয়পুরে মকর সংক্রান্তির এক মেলায় জুয়ার বোর্ড বসানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে গুরুতর জখম হন কবির আলি শেখ নামে বছর ৪১-এর এক তৃণমূলকর্মী। মাথায় আঘাত নিয়ে তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে আসা হয় দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডেই শুরু হয় ওই তৃণমূলকর্মীর চিকিৎসা। রবিবার দুপুর বারোটা নাগাদ মারা যান কবির আলি শেখ। ঠিক দুপুর ২:১৫ মিনিট নাগাদ স্থানীয় মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশকর্মীরা আচমকাই ঢুকে পড়েন এই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে যেখানে কবির আলি শেখের মৃতদেহ ছিল। জোর করে মৃতদেহ বের করে আনতে গেলে বাধা দেয় হাসপাতালের কর্মীরা। পুলিশ আঙুল উঁচিয়ে ধমকাতে শুরু করে দেয় কর্মীদের। এরপরই মলানদিঘি ফাঁড়ির পুলিশ জোর করে মৃত তৃণমূলকর্মীর দেহ বের করে আনে হাসপাতালের বাইরে।

আরও পড়ুন : Arms smuggler arrested in Malda আগ্নেয়াস্ত্র পাচারকারী গ্রেফতার ইংলিশবাজারে

খবর পেয়ে আসেন বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক Chaos at Durgapur Hospital 

খবর পেয়ে দুর্গাপুরের বেসরকারি ওই হাসপাতালে আসেন বাঁকুড়ার বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখার্জি। তিনি এসে শোনেন মৃত তৃণমূল কর্মীকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিধায়ক সটাং দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ছুটে আসেন। কিন্তু সেইখানেও ছিল না তৃণমূলকর্মীর দেহ। ততক্ষণে পুলিশ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট দিয়ে মৃত তৃণমূলকর্মীর দেহ ময়না তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে চলে যায়। আর বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়কের চোখ এড়িয়ে গিয়ে পুলিশ এই কাজ সেরে ফেলে। গোটা ঘটনায় হতবাক হয়ে যান খোদ তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখার্জি ও তাঁর অনুগামীরা। এরপর মৃত তৃণমূলকর্মীর এক ভাইকে নিয়ে বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক আসানসোলের উদ্দেশে রওনা দেন।

দুর্গাপুরের বেসরকারি হাসপাতালের ভেতর পুলিশের এই দাদাগিরিতে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটে যায় হাসপাতাল চত্বরে। আর এ ঘটনার সবটাই সিসিটিভি বন্দি, যেখানে সব ছবি স্পষ্ট হয়। দুর্গাপুরের মহকুমা শাসক শেখর কুমার চৌধুরী ফোনে জানান, যা ঘটেছে তার উত্তর পুলিশ দেবে।

টানটান উত্তেজনা দুর্গাপুর শহরে Chaos at Durgapur Hospital

গোটা ঘটনাকে ঘিরে রবিবার বিকেল থেকে ছড়িয়ে পড়ে উত্তেজনা। আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শ্রীমন্ত ব্যানার্জি ফোনে শুধু বাইরে আছি বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। গোটা ঘটনায় এখনও টানটান উত্তেজনা শহর দুর্গাপুরে। বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হবে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় জেলা বিজেপি সুর চড়িয়েছে। জেলা সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়ে সরকারের অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়েছেন।

—–
Published by Subhasish Mandal

SHARE
RELATED ARTICLES
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it

Most Popular