অনিসা পোদ্দার, আলিপুরদুয়ার, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : গোটা দেশের ব্যাঘ্র প্রকল্পগুলির পাশাপাশি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পেও শনিবার থেকে শুরু হল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সুমারি। দেশে ৪ বছর পরপর বাঘসুমারি হয়ে থাকে। ২০১৮ সালের সুমারিতে বক্সায় যদিও বাঘের সরাসরি উপস্থিতির কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে এবারের বাঘ সুমারি বক্সার ক্ষেত্রে যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতর থেকে সরাসরি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি উঠে এসেছে বন দফতরের ট্রাপ ক্যামেরায়।
সার্ভে চলবে বক্সার ৭৬২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় Buxa Tiger Reserve
জানা গেছে, এনিটিএ নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনেই ৬ দিনের সুমারি শুরু হয়েছে। চলবে ২০ জানুয়ারি অবধি। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, বক্সার ৭৬২ বর্গকিলোমিটার এলাকায় টানা সার্ভে চলবে। প্রতি দুই বর্গকিলোমিটার এলাকার জন্য একটি করে ক্যামেরা ট্রাপ পাতা হচ্ছে। বন্যপ্রাণীর শরীরের দুদিকের ছবি তোলার জন্য থাকবে দুদিকে দুটি ক্যামেরা। মূলত আগেই নির্দিষ্ট করা ট্রানসেক্ট লাইন ধরে সার্ভে শুরু হয়েছে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের সবকটি রেঞ্জ ও বিটের থেকে বনকর্মীদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ৮২টি দল। এবার বাঘের পাশাপাশি হাতি-সহ মাংসাশী ও তৃণভোজী বৃহৎ প্রাণীদেরও গনণা চলবে।
ক্যামেরা ট্রাপিং-সহ অত্যাধুনিক অন্যান্য উপায় হবে সুমারি Buxa Tiger Reserve
বাঘ গণনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই বনকর্মীদের রীতিমতো শিবির করেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। যেখানে ক্যামেরা ট্রাপিং নিয়ে ছিল আলাদা প্রশিক্ষণ। জিপিএস ডিভাইস-সহ নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপে জঙ্গলের প্রতিটি কম্পার্টমেন্ট ধরে ধরে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলেছে এদিন। বক্সার ফিল্ড ডিরেক্টর বুদ্ধরাজ শেওয়া, ডিএফডি (পশ্চিম) প্রভীন কাসওয়ান, ডিএফডি(পূর্ব) হরিশ এই সুমারিতে অংশ নিয়েছেন এদিন। উল্লেখ্য, আগে বাঘের পায়ের ছাপ ও স্ক্যাটের নমুনা দেখেই বাঘসুমারি হলেও বর্তমানে লাইন ট্রানসেক্ট এবং সাইন সার্ভে শুরু হয়েছে। নেওয়া হচ্ছে ক্যামেরা ট্রাপিং-সহ অত্যাধুনিক অন্যান্য উপায়।
আরও পড়ুন : Bikaner-Guwahati train accident বাড়ি ফেরা হল না মঙ্গলের, পাতলাখাওয়ায় আজ শুধুই হাহাকার
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো গভীর জঙ্গলে বাঘ সুমারি যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের Buxa Tiger Reserve
এবারের সমীক্ষার উদ্দেশ্য হল বনে বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর ঘনত্ব চিহ্নিত করা এবং সেইসঙ্গে বনের কোন এলাকায় বাঘ, হাতি, গৌড়, সম্ভার, বার্কিং ডিয়ার, হগ ডিয়ার, চিতাবাঘ, চিতল প্রভৃতি বন্যপ্রাণীর প্রজাতি রয়েছে তা খুঁজে বের করা। লাইন ট্রান্সেক্ট, সাইন সার্ভে একই সাথে সমস্ত রেঞ্জ এবং বিটগুলিতে ছয় দিন ধরে চলব। উল্লেখ্য, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের মতো গভীর জঙ্গলের ভেতর বাঘ সুমারি যথেষ্টই চ্যালেঞ্জের বনকর্মীদের কাছে। তবে প্রায় ৪০ বছর পর এবার ইতিমধ্যেই বক্সা থেকে বাঘের ছবি উঠে এসেছে। যা বাড়তি উৎসাহ তৈরি করেছে বনকর্মীদের মধ্যেও। বক্সায় এই মুহূর্তে ঠিক ক’টি রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে, আগামীতে গণনা থেকে সেই তথ্য উঠে আসবে। এদিকে, জানুয়ারি মাস ধরেই ক্যামেরা ট্রাপিং চলবে জঙ্গলে। বনকর্তারা আশাবাদী নতুন আরও রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ছবি উঠে আসতে পারে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর বুদ্ধরাজ শেওয়া বলেন, আজ থেকে বাঘ গণনা শুরু হয়েছে। যথেষ্টই আশাবাদী ক্যামেরা ট্রাপিং থেকে ভাল ফলাফল উঠে আসবে।
—–
Published by Subhasish Mandal