রণজিৎ দাস, মালদা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Brickfields closed at Malda কয়লার অভাবে বন্ধ অধিকাংশ ইটভাটা। বিপাকে ইটভাটা মালিক-সহ হাজারো শ্রমিক। অসমের কয়লার দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করল ইটভাটা মালিক-সহ শ্রমিকেরা। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি রাজনৈতিক তরজা।
হরিশ্চন্দ্রপুর ১ এবং ২ নম্বর ব্লকে প্রায় ১৩০টি ইটভাটা রয়েছে। ইটভাটাগুলিতে প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। জেলার অর্থনীতির একটা বড় অংশ এই ইটভাটা শিল্প। কিন্তু অভিযোগ গত তিন মাস ধরে মিলছে না অসমের কয়লা। রানিগঞ্জের কয়লা দিয়ে ইট পোড়ানো সম্ভব নয়, দাবি মালিকদের। যার ফলে ইট বানানো হলেও পোড়াতে পারছেন না ভাটা মালিকরা। বন্ধ হয়ে রয়েছে অধিকাংশ ইটভাটা। মাথায় হাত পড়েছে ভাটা মালিক থেকে শ্রমিক প্রত্যেকের। একদিকে লোন নিয়ে ইট তৈরি করেছেন, অন্যদিকে সেই ইট ভাটা থেকে ওঠাতে না পারলে পথে বসতে হবে তাঁদের। এই ইটভাটার ওপর ২৫ থেকে ২৬ হাজার শ্রমিকের সংসার চলে। কাজ না মিললে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হবে বলে দাবি তাঁদের। তাই শনিবার হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের ভালুকা-হরিশ্চন্দ্রপুর রাজ্য সড়কের ভালুকা ঢালাই মোড়ে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে ইটভাটা মালিক-সহ শ্রমিকেরা। প্রায় দু’ঘণ্টা অবরোধ চলার পর ভালুকা ফাঁড়ির পুলিশ এসে অবরোধ তুলে দেয়।
তিনমাস ধরে অসম ও মেঘালয়ের কয়লা নেই Brickfields closed at Malda
ইটভাটার মালিকদেল বক্তব্য, বিগত তিনমাস ধরে অসম ও মেঘালয়ের কয়লা পাচ্ছি না। আমাদের এলাকায় প্রায় ১৩০টি ইটভাটা রয়েছে। এই সমস্ত ভাটাগুলোতে ২৫-২৬ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। এখান থেকেই তাঁদের রুজি রোজগার। কয়লা না থাকার ফলে প্রায় ইটভাটার কাজ বন্ধ রয়েছে। এদিকে রানিগঞ্জ ও আসানসোলের কয়লার দাম আকাশছোঁয়া। এখানকার কয়লার মান অতি নিম্নমানের। ফলে ইট ভালোমতো পাকে না এবং সেই ইট খুব সস্তা দামে বিক্রি করতে হয়। যার ফলে আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা করেও সমস্যা মেটেনি। অসম ও মেঘালয় থেকে মালদা জেলার সমস্ত ইটভাটায় কয়লার আমদানি হয়। কয়লার অভাবে বেশিরভাগ ইটভাটা বন্ধ হওয়ার মুখে। আমরা সরকারকে রীতিমতো রেভিনিউ দিচ্ছি। লক্ষ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে ইটভাটার কাজ শুরু করছিলাম আমরা অনেকেই। কিন্তু কয়লার অভাবে ইটভাটা চালাতে পারছি না। আমাদের সরকারের কাছে অনুরোধ রেভিনিউ মুকুব করা হোক এবং অসম ও মেঘালয়ের কয়লা এই রাজ্যে আনার ব্যবস্থা করুক রাজ্য সরকার। তা না হলে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হবে আমাদের।
এক ইটভাটার শ্রমিক বাবর আলি জানান, কয়লার অভাবে একের পর এক ইটভাটা বন্ধ হওয়ার মুখে। আমরা বেরোজগার হয়ে পড়েছি। সারা বছরে ইট ভাটায় কাজ করে সংসার চালাতাম। এই ইটভাটা বন্ধ হওয়ার ফলে হয়তো আমাদের ভিন রাজ্যে গিয়ে কাজ করতে হবে।
আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। উত্তর মালদার বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, অসম থেকে কয়লা আসার বিষয়ে ঘৃণ্য রাজনীতি করছে তৃণমূল সরকার। যার ফলে বিপাকে পড়েছেন হরিশ্চন্দ্রপুরের ইটভাটা মালিকরা। তৃণমূলের জেলা কমিটির সদস্য দুলাল সরকার বলেন, সমস্ত বিষয় নিয়েই রাজনীতি করে বিজেপি।
—–
Published by Subhasish Mandal