অনিসা পোদ্দার, আলিপুরদুয়ার, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: Bio-diversity Park at Madarihat মাদারিহাটের জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়তায় তুঙ্গে। এবার সেই মাদারিহাটের বুকেই ২৫ বিঘা পরিত্যক্ত জলাশয় সংস্কার করে পর্যটনের নতুন ডেস্টিনেশন তৈরি করছে আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল-ঘেঁষা মাদারিহাটের উত্তর ছেঁকামারি গ্রামে থাকা ৮০০ মিটার লম্বা ২৫ বিঘা জমি নিয়ে জলাশয়টিকে কেন্দ্র করে বায়ো-ডাইভারসিটি পার্ক গড়ে তুলছে জেলা প্রশাসন। মূলত স্থানীয় মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আয় বাড়াতেই পর্যটনভিত্তিক এই পার্কটি গড়ে তোলা হচ্ছে।
গত ছ’মাস ধরে পার্কটির নির্মাণ কাজ চলছে। শনিবার জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা মাদারিহাটে এই বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কের নির্মাণ কাজ খতিয়ে দেখলেন। এদিন জেলাশাসকের সঙ্গে ছিলেন মাদারিহাটের বিডিও শরণ তামাংও। জেলাশাসক জানান, মাদারিহাট ব্লকের মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন উত্তর ছেঁকামারিতে এই বিশ্বকর্মা ঝোরা জলাশয় ঘিরে বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কের নির্মাণের কাজ চলছে। আগামী দু’মাসের মধ্যে জলাশয়টির সাজানোর কাজ শেষ হয়ে যাবে। জেলার পর্যটনের বিকাশ ও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আয়ের স্বার্থে এই পার্ক তৈরিতে ইতিমধ্যেই ২৬ লক্ষ টাকা খরচও হয়েছে।
৮০০ মিটার লম্বা ২৫ বিঘা জমি নিয়ে তৈরি হচ্ছে পার্ক Bio-diversity Park at Madarihat
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের পরিবেশ দফতরের ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে মাদারিহাটে এই বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। পরিবেশ দফতর ছাড়াও ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প-সহ সরকারি অন্যান্য প্রকল্প থেকেও এই পার্ক তৈরিতে অর্থ খরচ করা হচ্ছে।
জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের জঙ্গল ঘেঁষে সরকারি এই বৃহৎ জলাশয় এলাকাটি হাতিদের চলাফেরার করিডর হিসাবেই পরিচিত। জঙ্গলের পাশে থাকা সরকারি এই জলাশয়ের আশপাশে প্রকৃতি তার যাবতীয় সৌন্দর্য দুহাতে ঢেলে উজাড় করে দিয়েছে। নয়নাভিরাম এই জলাশয়ে কখনও কখনও হাতি ছাড়াও হরিণ ও গণ্ডারও জল খেতে নামে। জেলার পর্যটন সার্কিটের বিকাশ ও স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির আয়ের স্বার্থেই উত্তর ছেঁকামারিতে এই পার্ক তৈরি হচ্ছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কের জলাশয়ে পর্যটকদের জন্য বোটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। জলাশয়টিতে মাছ চাষ করে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর আয়ও বাড়ানো হবে। এতে উত্তর ছেঁকামারির মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কয়েকশো মহিলা উপকৃত হবেন।
প্রসঙ্গত, যেখানে মৌমাছিরা থাকে হাতি ওই সমস্ত এলাকা সব সময় এড়িয়ে চলে। হাতিদের শত্রু মৌমাছি। জলাশয়টি হাতির করিডর হওয়ায় প্রশাসন তাই এখানে মৌমাছি পালনেরও উদ্যোগ নেবে। এলাকার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দিয়েই এখানে মৌমাছি পালনের ব্যবস্থা করা হবে। এই মৌমাছি চাষ করেও স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির বাড়তি আয় হবে।
পর্যটক টানতে বোটিংয়ের পাশাপাশি এই বায়ো-ডাইভারসিটি পার্কের পাশে আলাদা করে একটি প্রজাপতি পার্কও গড়ে তুলবে প্রশাসন। সেই লক্ষ্যেই কাজ চলছে। জঙ্গলপ্রেমী পর্যটকদের বসার জন্য পার্কের জলাশয়ের পাশে প্রচুর কংক্রিটের আসনও তৈরি করা হবে। যাতে পর্যটকরা বসে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের অরণ্যশোভিত প্রাকৃতিক নৈসর্গও উপভোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন : Sundarban Milan Mela কোভিডবিধি মেনে ক্যানিংয়ে ‘সুন্দরবন মিলন মেলা’
—–
Published by Subhasish Mandal