কৌশিক দাস, কলকাতা,ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা:BGBS: Unkept promises awaiting fulfillment; আজ দমদম বিমানবন্দরে ট্রাফিক জ্যাম লেগে যেতে পারার সম্ভাবনা। বিভিন্ন বিমান সংস্থার ফ্লাইটের পাশাপাশি বেশকিছু ব্যক্তিগত বিমান বুধবার সকাল থেকেই দমদমের নেতাজি সুভাষ বোস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেমেছে। কারণ আর কিছুই নয়, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হচ্ছে। করোনার ধাক্কায় টানা দু’বছর বন্ধ থাকার পর ফের এই বাণিজ্য সম্মেলনের আসর বসছে। সেখানে আম্বানি-আদানির পাশাপাশি মহিন্দ্রা, বাজাজ,জিন্দাল, টাটা,মুঞ্জল, দেশের একের পর এক নামজাদা শিল্পপতিদের আসার কথা। শিল্পপতিদের আসার কথা শুধু নয় বরং তাঁরা আসবেনই।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে ২০১১ সাল থেকে যে বাণিজ্য সম্মেলন শুরু হয়েছে তাতে বারেবারে দেশ ও বিদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপতিরা অংশ নিয়েছেন। তাই এবারের শিল্প সম্মেলনও সার্বিকভাবে সফল হয়ে উঠবে বলে রাজ্য সরকারের আশা। ইতিমধ্যেই বিনিয়োগের বেশ কিছু প্রস্তাব সরকারের কাছে এসে পৌঁছেছে। এই বিনিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে যেমন আশার আলো দেখছেন অনেকে, তেমনই আশঙ্কাও আছে রাজ্যবাসীর। কারণ এর আগের শিল্প সম্মেলনগুলোয় মোটা অঙ্কের বিনিয়োগের মৌ স্বাক্ষর হলেও কার্যত তার বেশিরভাগই বাস্তবায়িত হয়নি। কাজের অভাবে ধুঁকতে থাকা পশ্চিমবঙ্গবাসী চাইছে রাজনৈতিক বিতর্ক সরিয়ে রেখে এবারের বাণিজ্য সম্মেলনে প্রস্তাবিত বিনিয়োগ যেন বাস্তবায়িত হয়।
কিন্তু গত এক দশকে বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্যের হার বেশ খারাপ। হুগলি আসানসোল,দুর্গাপুর,হলদিয়ায় ইতিমধ্যেই শিল্প পরিকাঠামো প্রস্তুত হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু রাজ্যের এই পুরোনো শিল্পাঞ্চলগুলি যত দিন যাচ্ছে ততই বেহাল হয়ে পড়ছে। সেখানে নতুন কোনও শিল্পাঞ্চল গড়ে ওঠেনি। উল্টে সেক্টর ফাইভ, নিউটাউনের আইটি হাব থেকে বেশ কিছু সম্ভাব্য বিনিয়োগ অন্যত্র চলে গিয়েছে। ইনফোসিস রাজ্যে তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির প্রস্তাব বাতিল করেছে। নতুন কোনও উল্লেখযোগ্য শিল্পতালুকও গড়ে ওঠেনি।
তবে কি তৃণমূল সরকারের জমানায় রাজ্যে কোনও শিল্পই আসেনি? এক্ষেত্রে উত্তর সদর্থক। কিন্তু যে সমস্ত কল কারখানা গড়ে উঠেছে তা নেহাতই আকারে ছোট। সেগুলো দিয়ে রাজ্যের শিল্প মানচিত্রে বিশাল বদল আনা সম্ভব নয়। বড় কারখানা গড়ে উঠলে সেখানে যেমন বিপুল বিনিয়োগ আসে তেমনই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ব্যাপক কর্মসংস্থান হয়।ঠিক যেমন হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যাল, রাজ্যের পাট শিল্পে হয়েছিল বা বীরভূমের যে দেউচা পাচামি কয়লা খনি প্রকল্পকে নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে সেখানেও কিন্তু বিপুল কর্মসংস্থান হওয়ার কথা।
বস্তুত সিঙ্গুরে টাটাদের ছেড়ে যাওয়া জমিতে এখন মাছ চাষ হচ্ছে। শালবনিতে জিন্দলদের ইস্পাত কারখানা গড়ে ওঠার কথা ছিল যে জমিতে তা এখন পরিতক্ত ভুতুড়ে এলাকা! ফলে নতুন আরেকটি বাণিজ্য সম্মেলনের আসরে একরাশ অস্বস্তি নিয়েই হাজির হতে হবে রাজ্য সরকারকে। তবে দেউচা পাচামি কয়লা খনি প্রকল্প শত অস্বস্তির মাঝে স্বস্তির বার্তা দিতে পারে শিল্পপতিদের। কারণ এই কয়লা খনি প্রকল্পকে ঘিরে বিতর্ক যেমন আছে তেমনই সম্ভাবনাও কম নয়। সবচেয়ে বড় কথা কোনও ছোটখাটো শিল্পপতি এই কয়লা খনি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
শোনা যাচ্ছে আদানিরা এই কয়লাখনি প্রকল্পে একটা বড় ভূমিকা নেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই সম্মতি জানিয়েছে রাজ্য সরকারকে।তবে অল্প হোক আর বেশি, এবারের বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে শুধু প্রস্তাবনা নয়, ফল আশা করছে রাজ্যবাসী।
Published by Samyajit Ghosh
আরো পড়ুন; Modi may skip Bengal Biz meet বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে এই কারণে আসবেন না মোদি