কৌশিক দাস, কলকাতা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: Bengal hotbed: Return of Maoists রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে ফের মাওবাদীদের ভ্রুকুটি। এখনও কোনও বড় নাশকতা না ঘটলেও একের পর এক বনধের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছে তারা। লালগড়ে রাস্তা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাদের একটি শক্তিশালী ল্যান্ডমাইন। গোয়েন্দা রিপোর্টের ভিত্তিতে অবস্থা বেগতিক দেখে দু’সপ্তাহের জন্য পশ্চিমাঞ্চলের জঙ্গলমহল এলাকায় হাই অ্যালার্ট জারি করেছে রাজ্য সরকার।
তবে এবারের মাওবাদী তৎপরতা নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন আছে।এর আগে দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের বিরুদ্ধে পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে তারা সশস্ত্র বিদ্রোহের পথে হেঁটেছিল। যথেষ্ট সমর্থন করেছিল সাধারণ মানুষ। পরে তাদের অন্যতম শীর্ষ নেতা কিষেনজি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পদে দেখতে চান। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে। যদিও কিষেনজির মৃত্যু হয়েছে পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র সংঘর্ষে।
এখানেই প্রশ্ন কাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে এবার হাতিয়ার করতে চাইছে মাওবাদীরা। গত এক দশকে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার জঙ্গলমহল এলাকায় মাও উপদ্রব একেবারে দূর হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় এলাকায় কান পাতলেই শোনা যাবে এই শান্ত পরিবেশের সুযোগ নিয়ে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের ঔদ্ধত্য লাগামছাড়া হয়ে উঠেছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দুর্নীতি।
জঙ্গলমহলের দরিদ্র গ্রামবাসীরা নিয়মিত রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেলেও তাদের কর্মসংস্থানের হাল বেহাল। এই দরিদ্র মানুষগুলোর উপার্জনের অন্যতম রাস্তা ছিল ১০০ দিনের প্রকল্পের কাজ। কিন্তু এই প্রকল্পে দুর্নীতি মাত্রা ছাড়িয়েছে। কাজ না করেই শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা পরিবার-পরিজনদের নামে পকেটে ভরছে টাকা। ফলে অভাব জাঁকিয়ে বসছে। সেইসঙ্গে আছে তৃণমূল নেতাদের কাটমানির দাবি। এই পরিস্থিতিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ যুবনেতারা হাল ধরার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে তৃণমূলের অন্দরে টানাপোড়েন বেড়েছে, আমজনতার কোনও সুরাহা হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে মাওবাদীরা দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের পাশাপাশি অভিষেক ঘনিষ্ঠ যুবনেতাদেরও জঙ্গলমহল এলাকায় টার্গেট করতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। অতীতের আতঙ্কের স্মৃতি মনে করে তৃণমূল নেতারাও আর প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না। সাধারণ মানুষের মতো তাঁদের মনেও ভয় ঢুকে গিয়েছে। সকলে তো আর পুলিশের নিরাপত্তা পান না। ফলে ধীরে ধীরে জঙ্গলমহলে এক বড় রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি হচ্ছে।
Published by Samyajit Ghosh
আরও পড়ুন New Army Chief লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ পান্ডে নতুন সেনাপ্রধান