Tuesday, September 17, 2024
Homeরাজ্যপশ্চিম বর্ধমানAllegations of corruption in Durgapur Sub-Divisional Hospital বিশেষ নিবন্ধ : দুর্গাপুর মহকুমা...

Allegations of corruption in Durgapur Sub-Divisional Hospital বিশেষ নিবন্ধ : দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘রাঁধুনি’ বিভ্রাট! কর্মী না হয়ে টাকা তোলার অভিযোগ

কৌশিক বোস, দুর্গাপুর, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : হাসপাতালের কর্মী নন, কোনওদিন হাসপাতালে পা দেননি। অথচ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের রান্না ঘরের রাঁধুনি হিসেবে গত ২০১৮ সাল থেকে আজও প্রতি মাসে ৭ হাজার ৩২৪ টাকা করে মাস মাইনে পেয়ে চলেছেন! দুর্গাপুরের এক সমাজকর্মীর এমন এক অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় শিল্পাঞ্চল।

অরুণ হালদার নামে দুর্গাপুরের এক সমাজকর্মী তথ্য জানার অধিকার আইনে (আরটিআই) চিঠি দেন দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. ধীমান মণ্ডলকে। চিঠিতে সুপারের কাছে তিনি জানতে চান, সোনালি পাণ্ডে নামে এক মহিলা ২০১৮ সাল থেকে হাসপাতালের হেঁশেলঘরের রাঁধুনি হিসেবে প্রতি মাসে মাইনে পেয়ে যাচ্ছেন। অথচ উনি হাসপাতালের কর্মী নন। কোনওদিন হাসপাতালে আসেনওনি। এটা কীভাবে সম্ভব? লিখিত চিঠি সঙ্গে তথ্য সম্বলিত নিয়মিত বেতন তোলার প্রমাণ দিয়ে তিনি ওই অভিযোগ পত্রে দাবি করেন কীভাবে এই অনিয়ম এতদিন ধরে হয়ে আসছে? সমাজকর্মীর এমন অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় জেলা রাজনীতি।

‘রাঁধুনি’ বিভ্রাট! কর্মী না হয়ে টাকা তোলার অভিযোগ Allegations of corruption in Durgapur Sub-Divisional Hospital

আরও পড়ুন : TMC factionalism in Kanksa সাইকেল স্ট্যান্ড দখল নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব! জয়দেবের মেলা শুরুর আগেই বিড়ম্বনা

অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের আপার ডিভিশন ক্লার্ক পার্থসারথী পাণ্ডের স্ত্রী সোনালি পাণ্ডের বিরূদ্ধে। অরুণ হালদার নামে অভিযোগকারীর অভিযোগ, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের অন্দরে অত্যন্ত প্রভাবশালী এই পার্থসারথী। আর যার জেরে সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে চলছে এই অনিয়ম। অবিলম্বে এই ঘটনায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হাসপাতাল সুপারের কাছে।

প্রসঙ্গত সরকারি হাসপাতালের রান্নাঘরের দায়িত্ব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নয়। হাসপাতাল শুধু দেখে ভর্তি থাকা রুগীদের খাবারের গুণমান ঠিকঠাক আছে কিনা। বেসরকারি এজেন্সি টেন্ডারের মাধ্যমে এই কাজের বরাত পায়। আর পুরো প্রক্রিয়াটা হয় স্বাস্থ্য দফতরের এক্কেবারে ঊর্ধ্বতন দফতরের অধীনে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপার ডা. ধীমান মণ্ডল জানান, ‘সমাজকর্মীর তথ্য জানার অধিকার আইনে লিখিত চিঠির পুরো বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার তারা যা করার করবেন!’

অন্যদিকে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁরা চক্রান্তের শিকার বলে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন সোনালি পাণ্ডে ও তাঁর স্বামী পার্থসারথী পাণ্ডে। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ হাসপাতাল সুপারের কাছে জমা পড়ার সত্যতাও স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁরা।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের এই ঘটনায় এখন তোলপাড় দুর্গাপুর। আর খোদ সরকারি হাসপাতালের হেঁশেল ঘরে অনিয়মের এই অভিযোগে এখন বিরোধীরাও সুর চড়িয়েছেন। তাঁরা দাবি জানিয়েছে অবিলম্বে এই অনিয়মের বিরুদ্ধে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়ার। সরকারি হাসপাতালের কিচেন ঘরের ওই বেসরকারি এজেন্সিকে ব্ল্যাক লিস্টেড করার দাবি জানিয়েছে সিপি আইএম। পুরো অনিয়মের জন্য তৃণমূল আর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতিকে দায়ী করেছেন বিরোধী সিপিআইএম ও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। পশ্চিম বর্ধমান জেলা সিপিআইএম সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতে এই অনিয়ম চলছে। সুর সপ্তমে চড়িয়ে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই বলেন, গোটা রাজ্যে এই অরাজকতা চলছে। দুর্গাপুর বাদ যায় কেন? অবিলম্বে যথাযথ তদন্ত করে আইনমাফিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে বিরোধীদের পাল্টা কটাক্ষ করে তৃণমূল নেতা তথা দুর্গাপুর মহকুমা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল সুপার ও মহকুমা প্রশাসনের সাথে তাঁর এই ব্যাপারে কথা হয়েছে। অন্যায় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিরোধীদের এ নিয়ে মাথাব্যাথার কোনও কারণ নেই। গোটা ঘটনায় এখন জোর তোলপাড় শহর দুর্গাপুর জুড়ে।

——-
Published by Subhasish Mandal

SHARE
RELATED ARTICLES
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it

Most Popular