সাম্যজিৎ ঘোষ, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: Subhash Bhowmick passed away প্রয়াত একদা ময়দান কাঁপানো সুভাষ ভৌমিক। একবালপুরের এক নার্সিং হোমেই দীর্ঘদিন চিকিত্সাধীন ছিলেন ময়দানের এই দাপুটে ফুটবলার কাম কোচ। আজ সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। প্রিয় ভোম্বলের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ ভারতীয় ফুটবলমহল। শোকবার্তা পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সুভাষ ভৌমিকের নানান শারীরিক সমস্যা ছিলই। আগে হৃদযন্ত্রে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল তাঁর। কিডনির অবস্থাও ভাল ছিল না। বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়মিত চলত ডায়ালিসিস। এসবের মধ্যেই তাঁর ধরা পড়ে কোভিড। তাই ডায়ালিসিস করা যায়নি নির্দিষ্ট সময়ে। অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। ভর্তি হন একবালপুরের এক নার্সিং হোমে। গত কয়েক দিন ধরেই সুভাষের অবস্থা সংকটজনক ছিল। আজ সব শেষ।
কোচ হিসেবে ইস্টবেঙ্গলকে জাতীয় লিগ এবং আশিয়ান কাপ দিয়েছিলেন সুভাষ ভৌমিক। বলা যেতে পারে সুভাষ পর্বের পর আর সেই সোনালি সময় আসেনি ইস্টবেঙ্গলে। শুধু তাই নয় ক্রীড়া পরিকাঠামোকে আধুনিক করার প্রশ্নে ইস্টবেঙ্গলকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দিয়েছিলেন সুভাষ। ক্লাবে জিমন্যাশিয়াম, জাকুজি বসানো এসবই হয়েছিল তাঁর হাত ধরে। যা দেখে জগমোহন ডালমিয়া বলেছিলেন, সুভাষ তো ইস্টবেঙ্গল টেন্টকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বানাতে চাইছে। লাল-হলুদ তাঁবুর জাকুজি দেখেই ইডেনেও তা বসিয়েছিলেন ডালমিয়া।
সুভাষ ভৌমিক ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাব ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ১৯৭০ সালে এশিয়ান গেমসে তিনি যে ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন, সেই দল ব্রোঞ্জ পদক লাভ করে। কলকাতার তিন প্রধান ফুটবল টিমের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন সুভাষ। প্রাক্তন সতীর্থ সুব্রত ভট্টাচার্য স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৭৬ সালে প্রথম আমি সুভাষ ভৌমিককে মোহনবাগান ক্লাবে সই করিয়েছিলাম। ৭৬ সালে উনি মোহনবাগানে আসার পরে যে সাফল্য আমরা পেয়েছিলাম তা ওঁনার অবদান। মন অনেক উদার ছিল। আরেক সতীর্থ শ্যাম থাপা বলেন, ময়দানে সুভাষই তাঁর বন্ধু ছিলেন।
Our Govt had conferred on him Kriraguru award in 2013. His passing away will create a big void in the world of sports. My deep condolences to his family, friends, followers and football enthusiasts.(2/2)
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 22, 2022
শোকবার্তা পাঠিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে পাঠানো মুখ্যমন্ত্রীর শোকবার্তায় লেখা হয়েছে, ‘বিশিষ্ট ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিকের প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে ‘ক্রীড়াগুরু’ সম্মানে ভূষিত করে। তাঁর প্রয়াণে ক্রীড়াজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি সুভাষ ভৌমিকের পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।’
রাজ্য সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যেত বাংলার এই কিংবদন্তি ফুটবলারকে। এর আগে বিশিষ্ট ক্রীড়াব্যক্তিত্বদের প্রয়াণে বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য জানানো হয়েছিল রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু সুভাষ ভৌমিক করোনা সংক্রমিত হওয়ায় আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন : ISL: SC East Bengal win at last নাওরেমে মহেশের জোড়া গোলে মরশুমের প্রথম জয় এসসি ইস্টবেঙ্গলের
—–
Published by Subhasish Mandal