Ind Cricket: Target Wriddhiman Saha দ্রাবিড় ঘুরিয়ে অবসরের কথা বলে, সৌরভ বলেছিল চিন্তা নেই আমি আছি
সাম্যজিৎ ঘোষ, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: তাঁর নাম ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতীয় ক্রিকেটার এবং বাঙালি ক্রিকেটার। ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসে বাঙালি ক্রিকেটারদের বঞ্চনা উপন্যাসের মতো। ১৯৩০ থেকে আজ অব্দি এই কলঙ্ক লেগেই রইল ভারতীয় ক্রিকেটে। উদাহরণ অনেক কাছে সুঁটে ব্যানার্জি থেকে শুরু করে সৌরভ গঙ্গুলিও। এবার ঋদ্ধিমান সাহা। হঠাৎ করেই বয়স নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করল। অথচ এক মাস আগেই তিনি ভারতের জয়ের অন্যতম কারিগর। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াকু ৬১ রান জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিল। হঠাৎ করেই একমাস পরে তাঁর জন্য সব দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে বাদ পড়ার পর মুখ খুললেন ঋদ্ধিমান।
দাদি,(সৌরভ গাঙ্গুলি) নিজে থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করে বলেছিল ‘ওয়েল প্লেইড’। সঙ্গে এটাও লিখেছিল, ‘যতদিন আমি আছি, তোকে কিছু ভাবতে হবে না।‘
কানপুর টেস্টে ঘাড়ে ব্যথা নিয়ে ৬১ রান করার পর দাদি( সৌরভ গাঙ্গুলি) নিজে থেকে হোয়াটসঅ্যাপ করে বলেছিল ‘ওয়েল প্লেইড’। সঙ্গে এটাও লিখেছিল, ‘যতদিন আমি আছি, তোকে কিছু ভাবতে হবে না।‘ দাদির কথা শুনে স্বাভাবিক ভাবেই মনোবল বেড়ে গিয়েছিল। সৌরভ নামটা রয়েছে তার সঙ্গে সে একজন বোর্ড প্রেসিডেন্ট। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের শেষে মাত্র এক মাসে ছবিটা বদলে গেল! মাত্র একটা সিরিজের পরেই আমার বয়স অনেকটা বেড়ে গেল নাকি!
এতদিন বলা হয়নি। ঠিক কী ঘটেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়, বললেন ঋদ্ধি।
ঘুরিয়ে আমাকে অবসরের কথাই বলেছিলেন রাহুল ভাই
“দক্ষিণ আফ্রিকায় সিরিজ হারের পর রাহুল ভাই আমাকে আলাদা ভাবে ওর ঘরে ডেকে পাঠায়। সেই সময় আমি ভেবেছিলাম সেই সিরিজে দলের সার্বিক পারফরম্যান্স নিয়ে এজাতীয় কিছু হয়তো বলবেন। কিন্তু ওঁর কথা শোনার পর আমি তো অবাক হয়ে পড়েছিলাম। জোর ধাক্কা লেগেছিল। ভদ্রলোক, তাই সরাসরি বলেননি। ঘুরিয়ে বলতে চেয়ে ছিলেন আমাকে ভবিষ্যতের টেস্ট দলে জন্য ভাবা হবে না। চাইলে আমি আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারি অর্থাৎ ঘুরিয়ে আমাকে অবসরের কথাই বলেছিলেন রাহুল ভাই।”
“রাহুল ভাইকে তখনই জিজ্ঞেস করেছিলাম। ওঁর আমার পারফরম্যান্স, ফিটনেস ও বয়স নিয়ে কোনও প্রশ্ন আছে কিনা। কিন্তু রাহুল ভাই তা বলেনি । শুধু বলেছিলেন, আমরা তরুণ প্রজন্মকে দেখে নিতে চাই।
“একই কারণ দেখিয়ে ফোন করে একই কথা বলেছিলেন নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মা।”
“আমি আরও বলেছিলাম ক্রিকেটের জন্যই বেঁচে আছি এই খেলাটা ভালো লাগে তাই যতদিন ইচ্ছে খেলে যাব। আমার অবসরের পরিকল্পনা এখন নেই।”
Ind Cricket: Target Wriddhiman Saha
“অবসর নেওয়া একেবারে আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যত দিন শরীর দেবে, খেলব। কারণ ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেট খেলার আনন্দের জন্য ক্রিকেট খেলেছি। তাই ভারতীয় দলে সুযোগ না পেলেও খেলা চালিয়ে যাব। কারণ সামনে আইপিএল, বাংলা দল ও ক্লাব ক্রিকেট আছে। তবে আমাদের দলেই শিখর ধওয়ান, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো একাধিক ক্রিকেটার আছে যারা আমার বয়সী। তারা তো অনায়াসে খেলে যাচ্ছে। নির্বাচকদের হয়তো আমাকে আর ভাল লাগেনি। তাই আমাকে বাদ দিয়ে নতুন প্রতিভা দেখে নিতে চাইছে।”
আমি তো সারাজীবন ক্রিকেট খেলব না! তবে আপাতত আইপএল নিয়ে ভাবছি। গুজরাট টাইটানস আমাকে সুযোগ দিয়েছে। প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে আমি আমার সেরাটি দেব, যেটা করেছি দেশের জার্সি পড়েও। তাছাড়া বাংলার হয়ে মাঠে নামতে পারি যদি নকআউটে যোগ্যতা অর্জন করে। ক্লাব ক্রিকেট তো আছেই। দেশের হয়ে টেস্ট খেলার সময় তো অনেকবার ক্লাব ম্যাচ খেলেছি। তাই এখন বাকি সময়টা আনন্দের সঙ্গে খেলতে চাই।
নির্বাচক প্রধান বলছেন রঞ্জি ট্রফি একটা মাপকাঠি। কিন্তু আমাকে যখন বলে দেওয়া হয়েছে আমাকে আর ভাবা হবে না, তাহলে এসব কথা কেন আসছে ? আমাকে ফোন করে কেন রঞ্জি খেলতে বলা হবে।
এতদিন টেস্ট দলের সঙ্গে ছিলাম বলে কোনো কথা বলিনি।
দ্রাবিড় ঘুরিয়ে অবসরের কথা বলে, সৌরভ বলেছিল চিন্তা নেই আমি আছি
তবে আমি টেস্টে খেলব কিনা এই কথা এতদিন আগে কিভাবে সংবাদমাধ্যমে বেরিয়ে গেল তা অবাক করেছে। আমার ব্যক্তিগত কারণে আমি খেলতে চাইছি না। তবে একটা কথা বলতে চাই যে আমার স্ত্রী দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল। এখনো সে পুরো সুস্থ নয়। তাই জৈব বলয় থেকে বেরিয়ে ওর সঙ্গে সময় কাটাতে চাই। এজন্য আপাতত রঞ্জি ট্রফি খেলছি না। খেলেই বা কি হবে আমার জন্য ফেরার দরজা খুলে দেবে না। যতই নির্বাচক কমিটির প্রধান বলুক যে রঞ্জি খেলতে হবে।
গোটা সাক্ষাৎকারে ভেতরের আগুনটা বেরিয়ে এলো ঋদ্ধিমানের। যিনি এতোদিন চুপচাপ ভালোমানুষ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটে। নিঃশব্দে দেশসেবা করে গেছেন। আজ তাকেই অপমানিত হতে হলো।
Published By Samyajit Ghosh