ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : হিমাচলপ্রদেশ সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হেলিকপ্টার সকাল সাড়ে ১১টায় কাঙ্গানিধর হেলিপ্যাডে এসে পৌঁছল। প্রধানমন্ত্রী হিমাচলের ভূমি স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গেই ছোট কাঁসরের আওয়াজে তখন আকাশবাতাস অনুরণিত। ঠিক এই সময় মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সাদর অভ্যর্থনা জানান। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে ২ হাজারের বেশি পুলিশ অাধিকারিক ও কর্মচারী মোতায়েন করা হয়েছে। মঞ্চে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী চম্বা থালা স্মারক উপহার দেন প্রধানমন্ত্রীকে। এরপর মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বোতাম টিপে ২৮ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার গ্রাউন্ড ব্রেকিং অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এরপর পুরো প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এই অনুষ্ঠানে পিএম মোদি পাহাড়ি ভাষায় ‘মিঠ্ঠা’ এবং ‘সেপো বদি’ শব্দের উল্লেখ করে বলেন যে, ‘আজ আমি দেবভূমিতে আশীর্বাদ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। দেবভূমির সমস্ত দেব-দেবীকে আমার প্রণাম। আমি যখনই বাজারে যাই তখন মনে পড়ে বদনে রা মিঠা আর সেপো বদি।’
পর্যটকেরা দেবভূমি প্লাস্টিকমুক্ত রাখুন (Modi Himachal Visit Update)
গিরি নদীর উপর তৈরি হওয়া রেণুকা বাঁধ প্রকল্প রাজ্যকে ব্যাপকভাবে উপকৃত করবে। প্লাস্টিকের কারণে হিমাচল যাতে দূষিত না হয় তার জন্য পর্যটকদেরও এদিন আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। হিমাচলে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এখানের চেয়ে পর্যটনে মজা কোথায় পাবেন? একই সঙ্গে মোদি বলেন, হিমাচল প্রাকৃতিক চাষে ভালো কাজ করছে। দেড় লাখেরও বেশি কৃষক রাসায়নিকমুক্ত প্রাকৃতিক চাষ শুরু করেছেন। দেশের বাকি কৃষকদেরও প্রাকৃতিক চাষাবাদ করার জন্য আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, হিমাচল ভারতের ফার্মেসি হাব।
কোন প্রকল্পগুলির উদ্বোধন হবে (Modi Himachal Visit Update)
প্রধানমন্ত্রী মোদি তাঁর এই হিমাচল সফরে ৭ হাজার কোটি টাকার রেণুকা বাঁধ প্রকল্প এবং ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি ২১০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন লুহরি স্টেজ-১ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সিমলায় পাব্বার নদীর উপর ১১১ মেগাওয়াট সাভদা কুড্ডু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন, যার পরিমাণ ২ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নির্মিত ৬৬ মেগাওয়াট ধৌলসিদ্ধ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভাবনার সবকিছুই নিজের সম্পর্কের অনুভূতি দেয়: জয়রাম ঠাকুর (Modi Himachal Visit Update)
মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখনই হিমাচল আসেন মনে হয় নিজেদের একজন এসেছেন। আপনার চিন্তার অনুভূতিই সে কথা বলে। আজ মাণ্ডি যাওয়ার পথে দলের পুরনো সৈনিকদের খবর জানতে চাইলেন। প্রধানমন্ত্রী হিমাচল সরকারের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলির উপর একটি কফি টেবিল বইও প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর বলেছেন যে, হিমাচলের ১.১৬ লক্ষ লোককে আয়ুষ্মান কার্ডের মাধ্যমে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হিমকেয়ার স্কিমের অধীনে ২.২০ লক্ষেরও বেশি লোককে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গৃহিণী সুবিধা যোজনার আওতায় হিমাচলের ৩.২৩ লক্ষ পরিবারকে এলপিজি গ্যাস দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় ৪ হাজার ৮৮৭টি এবং শহরাঞ্চলে ৪ হাজার বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ২০২২ সালের জুনে তৈরি হওয়া এইমস বিলাসপুর হাসপাতাল উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ২০২২ সালে বিজেপি আবারও হিমাচলে সরকার গঠনে যুদ্ধ করতে ছাড়বে না বলেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
———-
Published by Subhasish Mandal