শুভাশিস মণ্ডল, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : একনায়কতন্ত্রের দেশ উত্তর কোরিয়ায় হাসতে মানা! তাও আবার টানা ১১ দিন। ১৭ ডিসেম্বর থেকে নিয়ম না মানলে কঠোর সাজায় ভুগতে হবে দেশবাসীকে। হ্যাঁ, এমনই ফরমানে কার্যত প্যাঁচে পড়েছেন উত্তর কোরিয়ার নাগরিকেরা। নেপথ্যে একনায়ক প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়কের খামখেয়ালিপনার দৃষ্টান্ত সর্বজনবিদিত। আগেই জিন্স, স্টাইলিশ হেয়ার স্টাইল এবং কান ফোটানো নিষিদ্ধ করেছিলেন তিনি। এবার আরও একধাপ এগিয়ে দেশজুড়ে নিষিদ্ধ করলেন হাসি। প্রাক্তন স্বৈরতান্ত্রিক রাষ্ট্রনায়ক কিম জং-ইলের দশম মৃত্যুবার্ষিকীতে শোকের আবহ বজায় রাখতেই একাধিক ফতোয়া জারি করেছেন ছেলে প্রেসিডেন্ট কিম জং-উন। ৬৯ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ২০১১ সালে মারা যান স্বৈরশাসক কিম জং-ইল। ১৯৯৪ সাল থেকে উত্তর কোরিয়া শাসন করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুর পরই ছেলে কিম জং-উন শাসনভার গ্রহণ করেন এবং তাঁর বাবাকেও ছাপিয়ে বড় স্বৈরশাসক পরিচয় নিয়ে তামাম বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
তবে শুধু হাসি আটকে রাখাতেই সীমাবদ্ধ নন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক। জারি করেছেন একাধিক বিধিনিষেধ। রেডিও ফ্রি এশিয়া জানিয়েছে, ১১ দিনের জাতীয় শোকের সময় কেউ যদি নিয়ম ভঙ্গ করে, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতেও মানুষ বের হতে পারছে না। এমনকী মদ্যপান করতে পারবেন না দেশবাসী। একইসঙ্গে কোনও রকম আচার অনুষ্ঠান, যেমন জন্মদিন, শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের কোনও কাজ করতে পারবেন না উত্তর কোরিয়াবাসী।
North Korea Kim Jong-Un Decree : কারও বাড়িতে মৃত্যুতে উচ্চস্বরে কান্নাও নিষিদ্ধ
একজন নাগরিক জানিয়েছেন, এর আগেও কিম জং-ইলের মৃত্যুবার্ষিকীতে মাতাল অবস্থায় পাওয়া গেলে গ্রেফতার করা হত। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের মধ্যে বেশিরভাগকেই পরে শনাক্ত করা যায়নি। হোয়াংহো প্রদেশের এক বাসিন্দা বলেন, পুলিশকে জনগণের ওপর কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। কেউ নিয়ম ভঙ্গ করলে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা হবে। এজন্য এক মাসব্যাপী পুলিশের বিশেষ ডিউটি আরোপ করা হয়েছে। এই সময় পুলিশ আধিকারিকরাও ঘুমাতে পারবেন না! পুলিশকে বলা হয়েছে যাদেরকে এ সময় বেশি দুঃখিত দেখা যাবে না, তাদের ওপর কড়া নজর রাখতেও।