Sunday, November 24, 2024
Homeলাইফ স্টাইলPneumonia disease নিউমোনিয়া সম্পর্কে সতর্কতা

Pneumonia disease নিউমোনিয়া সম্পর্কে সতর্কতা

Peneumonia disease নিউমোনিয়া’ বড়দের চেয়ে শিশুদের জন্য বেশি বিপজ্জনক

সুমন তিওয়ারি, নয়াদিল্লি, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের সংক্রমণ। যখন কোন ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক ফুসফুসে পৌঁছায় এবং বাড়তে শুরু করে, তখন ফুসফুসে সংক্রমণ শুরু হয়। ফুসফুসে ছোট ছোট বায়ু থলি থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে এই থলিতে পুঁজ বা অন্যান্য তরল ভরে যায়, যার কারণে শিশুর শ্বাস নিতে সমস্যা হয়। যদি আপনার শিশুরও ক্রমাগত কাশি হয়, শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, তারও জ্বর হয়, তাহলে এগুলো নিউমোনিয়ার লক্ষণ হতে পারে।

Pneumonia disease  নীরব ঘাতক নিউমোনিয়া

নিউমোনিয়া হলে শিশুরা দ্রুত শ্বাস নিতে শুরু করে। সাধারণত, শ্বাস নেওয়ার সময় বুক প্রসারিত হয়, তবে নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে এটি সংকুচিত হয়।এই কারণে ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া ঘাতক রোগ হিসাবে পরিচিত। আমাদের দেশে এই রোগ শিশুদের নীরব ঘাতক হয়ে উঠেছে। নিউমোনিয়া প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের জন্য বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করা হয়। পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এই রোগটি ঘাতক রোগ হিসেবে স্বীকৃত। প্রতি বছর আট লাখ শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ।এর মধ্যে প্রায় দেড় লাখ নবজাতক।

 

Pneumonia disease প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একটি শিশু মারা যায়

তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে,ছোট শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া একটি ঘাতক রোগের মতো। ভারতে শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়া খুবই সাধারণ। ইউনিসেফের ২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় প্রাণ হারিয়েছে। প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একটি শিশু এই রোগের কারণে মারা যায়।

১. যেসব শিশু আবদ্ধ ঘর বা ছোট জায়গায় থাকে, তাদের নিউমোনিয়া হওয়ার প্রবণতা বেশি।

২. যে বাড়িতে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নেই সেখানে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

৩. যেসব এলাকায় দূষণের সমস্যা রয়েছে, সেখানে শিশুদের ক্ষেত্রেও এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

খেলার সময় শিশুদের শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় কেন?

গুরুগ্রামের মণিপাল হাসপাতালের মতে, ফুসফুস খুব ছোট কোষ দ্বারা তৈরী, খুবই পাতলা দেয়াল বিশিষ্ট লক্ষাধিক বায়ু থলির দ্বারা তৈরি। এই থলিগুলি অ্যালভিওলি নামে পরিচিত। যখন একটি সুস্থ শিশু শ্বাস নেয়, তখন তা বাতাসে ভরে যায়। কিন্তু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এই অ্যালভিওলি পুঁজ এবং তরল দ্বারা ভরা থাকে। তাই শিশু শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায় না এবং শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হয়।  সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়, যা শিশুর  মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শিশুদের থেকে দূরে রাখুন

বলা হয় যে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে নিউমোনিয়া নিরাময় করা যায়, কিন্তু এখনও মাত্র এক-তৃতীয়াংশ শিশুই এই ওষুধগুলি পায়। নিউমোনিয়া সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাকের কারণে হয়। টিকাদান, পুষ্টির জন্য দায়ী পরিবেশগত কারণগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ করা যেতে পারে। শিশুদের নাকে ও গলায় উপস্থিত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ফুসফুসের সংক্রমণ হয়। আশেপাশের কারো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে এর সংক্রমণ বাতাসে ছড়ায়। এটি শিশুদের মধ্যে সংক্রমণও ঘটায়।

 

পরিসংখ্যানে ভয়

ইউনিসেফের পরিসংখ্যান অনুসারে, নিউমোনিয়ার কারণে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একটি শিশু মারা যায়। শৈশব নিউমোনিয়া সম্পর্কে সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সরকার ‘সানসা’ নামে একটি প্রচার শুরু করেছে। এটি শিশুদের নিউমোনিয়া দূর করতে জনগণকে সচেতন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষার ২০১৯-২১ রিপোর্ট অনুসারে, শৈশব নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৭৩ শতাংশ থেকে ৬৯ শতাংশে নেমে এসেছে।

উপসর্গ উপেক্ষা করবেন না

১. শিশুর ঠোঁট ও নখ যেন গোলাপি হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। যদি এটি নীল বা ধূসর দেখায় তবে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান। শিশুর শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে যেমন- বুক দ্রুত উঠছে, পেট দ্রুত ভেতরে-বাইরে যাচ্ছে, এগুলো বিপজ্জনক অবস্থা। দেশীয় ভাষায় একে বলে পাঁজরের নড়াচড়া বা শ্বাস-প্রশ্বাসের দ্রুত নড়াচড়া। দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান।

২. ঘরে সর্দি-কাশির ওষুধ না দিয়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকের নির্দেশে সময়মতো শিশুকে অ্যান্টিবায়োটিক দিন। এছাড়াও ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। থার্মোমিটার দিয়ে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিতে থাকুন।

৩. জল পান করান যাতে শিশুদের শরীরে হাইড্রেশনের অভাব না হয়। ঘরে একটি হিউমিডিফায়ার রাখাও উপকারী হবে। এতে শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হবে। অন্যান্য শিশুদের সংক্রামিত শিশু থেকে দূরে রাখুন। শিশুকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম পেতে দিন।

SHARE
RELATED ARTICLES
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it

Most Popular