ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা
Fruit For Health
প্রত্যেক ফলেরই নিজস্ব গুণাগুণ এবং বৈশিষ্ট্য থাকে। সবেদাও এর ব্যতিক্রম নয়। স্বাদে মিষ্টি এই ফলে রয়েছে এমন কিছু পৌষ্টিক উপাদান যা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুবই উপযোগী। বহু যুগ ধরেই স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় একাধিক সমস্যায় সবেদা পথ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সবেদা খেয়ে শরীরের কী কী স্বাস্থ্য উপকার হয়, সে সম্পর্কে আমরা আজ বিশদভাবে জানি। সবেদাতে রয়েছে আয়রন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, স্টার্চ, প্রোটিন, ফ্যাট এবং আর্দ্রতা। তাই সবেদার গুণাবলীর সাথে হতাশাগ্রস্থ, ক্লান্ত, দুর্বল ব্যক্তির জন্য অমৃতের মতো।
সবেদা খাওয়ার উপকারিতা:Fruit For Health
ক্যান্সার প্রতিরোধক
গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে সবেদার মিথানল নির্যাস ক্যান্সারের সম্ভবনা প্রবণ টিউমারের বৃদ্ধি প্রতিরোধ করে। একইসাথে আরোও জানতে পারা গিয়েছে যে, সবেদা এবং ফুলের নির্যাস স্তন ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে পারে। তবে মানুষের ক্যান্সার প্রতিরোধের ওপর সবেদার প্রভাব খতিয়ে দেখতে আরোও গবেষণার প্রয়োজন আছে।
হাড়ের শক্তি বর্দ্ধক
হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং আয়রন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সবেদায় এই তিনটি পৌষ্টিক উপাদানই পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। তাই সবেদা হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে তোলার ক্ষেত্রে খুবই উপকারি। এছাড়াও সবেদায় রয়েছে তামাজাত উপাদান যা হাড় এবং হাড় সংযুক্ত দেহ কোষ এবং পেশীর জন্য অপরিহার্য।
গর্ভাবস্থায় উপকারী
গর্ভাবস্থায় উপযোগী একাধিক ফলের মধ্যে সবেদা হলো একটি অন্যতম পরিচিত নাম। সবেদায় উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট, শর্করা, ভিটামিন সি, ইত্যাদি পৌষ্টিক উপাদান গর্ভবতী মহিলা এবং মায়েদের জন্য খুবই উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। খাদ্য হিসেবে সবেদা, গর্ভবতী মহিলাদের শারীরিক দুর্বলতা দূর করার ক্ষেত্রে এবং উপসর্গ যেমন গা বমি ভাব, মাথা ঘোরা ইত্যাদির সহজেই উপশম করে।
ওজন নিয়ন্ত্রক
কম শারীরিক সচলতার দরুন ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা দেখা যায়। এক্ষেত্রে সবেদা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মনে করা হয় যে খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ করলে প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ ভাবে ওজন হ্রাস পায়। ইন্টারন্যাশানাল জার্নাল অফ ফুড সায়েন্স অ্যাণ্ড নিউট্রিশান কর্তৃক পরিচালিত গবেষণা সূত্রে জানা গিয়েছে যে সবেদা গ্যাস্ট্রিক এনজাইম ক্ষরণ নিয়ন্ত্রন করতে পারে যা মেটাবলিজমকে প্রভাবিত করে।
পরিপাকে সহায়ক
পরিপাক ক্রিয়া সুষ্ঠভাবে সম্পাদনের জন্য ফাইবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এবং একইসাথে মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্র্য পদার্থ বিয়োগ করতে সহায়তা করে। মনে করা হয় যে সবেদায় উপস্থিত ফাইবার হজমে সহায়ক। এবং সুষ্ঠভাবে মল ত্যাগের কারণে কোষ্ঠ্য কাঠিন্যের সমস্যাও দূরীভুত হয়। শোনা যায় যে সবেদা জলে ফুটিয়ে সেদ্ধ করে গ্রহণ করলে তা অনায়াসেই ডায়রিয়া নিরাময় করে।
দাঁতের ক্ষয় রোগ নিরাময়
দাঁতের ক্ষয় রোগ এখনকার দিনে একটি অতি পরিচিত অসুখ। যা প্রধানত ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমনের কারণে হয় বলে মনে করা হয়। সবেদা এক্ষেত্রে একটি কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সবেদায় উপস্থিত অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল বৈশিষ্ট্য সংক্রমন সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করে দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করে।
সর্দি কাশি প্রতিরোধক
সর্দি কাশি দূর করার ক্ষেত্রেও সবেদা খুবই উপকারী একটি ফল। এটি নাসারন্ধ্র, শ্বাসনালী, এবং মিউকাস থেকে শ্লেষ্মা দূর করে শরীরে আরাম দেয়। একটি গবেষণা অনুসারে, সবেদা পাতা প্রাচীনকাল থেকেই সর্দি এবং কাশির নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। মনে করা হয় যে সবেদা পাতা ফুটিয়ে সেই জল ঠাণ্ডা করে পান করলে সর্দি – কাশির উপশম হয়।
কিডনিতে পাথর হওয়ার প্রবণতা কমায়
অস্বাস্থ্যকর খাদ্য এবং পানীয় গ্রহণের অভ্যাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন কিডনিতে পাথরের মতন শারীরিক সমস্যার সৃষ্টি করে। তবে এই সমস্যার থেকে অনায়াসে মুক্তি পেতে হলে খাদ্য হিসেবে সবেদা গ্রহণ অপরিহার্য। কিডনির পাথর থেকে রক্ষা পেতে হলে এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিলে সবেদা ফলের বীজ গুঁড়ো করে তা গ্রহণ করলে উপকার পাওয়া যায়। সবেদা বীজের গুঁড়ো গ্রহণ করলে প্রস্বাবের সাথে কিডনিতে উপস্থিত পাথর বেরিয়ে যায় বলে মনে করা হয়।
Fruit For Health
Publish by Monirul Hossain