Thursday, November 21, 2024
Homeলাইফ স্টাইলBenefits of kiwi fruit কিউই ফলের উপকারিতা

Benefits of kiwi fruit কিউই ফলের উপকারিতা

মমতা রানি, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা, Benefits of kiwi fruit কিউই, নামটি হয়তো শুনে থাকবেন। এটি অত্যন্ত সুস্বাদু একটি ফল। স্বাদের মতোই এর গুনাগুণও অঢেল। কয়েক দশক আগে এই ফলের প্রচলন ভারতবর্ষে সে ভাবে দেখা যায়নি। তবে, বর্তমানে ভারতের কিছু জায়গায় ফলটি পাওয়া যায় এবং এর গুনাগুণ সম্পর্কে প্রায় অনেকেই ওয়াকিবহাল। এশিয়া এবং অস্ট্রেলিয়ায় এই ফল জনপ্রিয়তা পেলেও ভারতের বহু জায়গায় এখনও দেখা যায় না এই ফল। খাস কলকাতাতেও প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। তবে দার্জিলিং, সিকিম সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় কিউই চাষের পরিকল্পনা শুরু হয়েছে। স্বাদে ভরপুর এই ফলের স্বাস্থ্য উপকারিতাও কিন্তু প্রচুর। একটি ফল খেলেই পাবেন হাজারো সমস্যা থেকে মুক্তি। 

জানুন কিউই-র স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে Benefits of kiwi fruit 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

কিউয়ি রোগ প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের বিরুদ্ধে লড়াই করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও এতে উপস্থিত ভিটামিন-সি রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য পাওয়া গেছে যে, কিউয়ি শ্বাসনালীর ইনফেকশন কমায় এবং সহজাত ও অভিযোজিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

ওজন কমানো

কিউয়ি ফলে ক্যালোরির মাত্রা খুব কম থাকে এবং প্রায় নগণ্য ফ্যাট থাকে। কিন্তু ফাইবার থাকে প্রচুর। এইসব কারণে ওজন কমানোর ডায়েটের ক্ষেত্রে কিউয়ি একটি দারুণ উপকারী ফল। এতে একদমই ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নেই। শরীর সুস্থ ও ঝরঝরে রাখতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব দরকার।

হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে

কিউয়ি ফলের উপকারিতা বলতে উল্লেখ করতে হয় হার্টের জন্য এর উপকারিতা। পটাশিয়াম এমন একটি মিনারেল যা হার্টের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় জানা গেছে, কোনো ব্যক্তি যদি প্রতিদিন ৪.০৬৯ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম খান, তাহলে হার্টের রোগে তাঁর মৃত্যুর সম্ভাবনা ৪৯% কমে যায়। এছাড়া কিউয়ি খেলে রক্তচাপও কমে যায়। দিনে দু-তিনটি করে কিউয়ি খেলে তা প্লেটলেট হাইপার অ্যাক্টিভিটি কমায় এবং প্লাজমা লিপিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। এই দুটি ফ্যাক্টর শরীরে হৃদরোগের জন্য দায়ী।

ডায়াবেটিস রুখতে

বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানতে পারা যায় যে, কোনও ব্যক্তি কিউয়ি ফল খেলে তার গ্লাইসেমিক প্রতিক্রিয়া উন্নত হয়। এই ফলে আছে প্রচুর জল, যা ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য খুব ভালো। ১০০ গ্রাম কিউয়ি ফলে মাত্র ৫ গ্রাম গ্লুকোজ থাকে। রক্তের শর্করার ওপর এর প্রভাব ন্যূনতম। একটা মাঝারি আকারের কিউয়ি ফলে ১১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট থাকে যা অন্যান্য ফলের তুলনায় অনেক কম। কিউয়ি ফলে উপস্থিত ফাইবার ব্লাড সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণ করে।

হজমশক্তি বাড়াতে

কিউয়িতে উপস্থিত ফাইবার পরিপাক ক্ষমতা অর্থাৎ হজম শক্তি বাড়ায়। কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সাধারণ হজম সমস্যা কিউয়ি খেলে ঠিক হয়ে যায়। কিউয়ি ফলে যে পটাশিয়াম পাওয়া যায় তা হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিপাক তন্ত্রেও সাহায্য করে। কিউয়ি ফলে অ্যাকটিনিডিন নামক উৎসেচক পাওয়া যায় যা পাচনে সহায়তা করে।

গর্ভাবস্থায় কিউয়ির গুণাগুণ 

গর্ভাবস্থায় কিউয়ি খেলে তার উপকারিতা প্রচুর। মায়ের পাশাপাশি বাচ্চাও এই উপকারিতা লাভ করে। কিউয়িতে ফলিক অ্যাসিড, ডায়েটরি ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভরপুর থাকে। ফলিক অ্যাসিড গর্ভের মধ্যে বাচ্চার বৃদ্ধিকে ঠিক রাখে এবং স্বাস্থ্য উন্নত করে। প্রতিদিন কিউয়ি খেলে গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য পেটের সমস্যা হয় না কারণ এতে রয়েছে ফাইবার। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি যেমন অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদান হিসেবে কাজ করে তেমনি দেহে আয়রন শোষণে সাহায্য করে। এতে অ্যানিমিয়া হয় না।

হাঁপানি কমাতে

কিউয়ি ফলে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন হাঁপানি রোগের চিকিৎসায় কার্যকরী। গবেষণায় দেখা গেছে যে, কিউয়ি ফল বাচ্চাদের হাঁপানি ও হুইজিং রোগ থেকে প্রতিরক্ষা করে। ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই একে অপরের পরিপূরক। এই দুই ভিটামিন বাচ্চাদের দেহে ফুসফুসের কার্যকলাপ উন্নত করে। হাঁপানির মতো শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যাতেও এই ফল এতটা কার্যকারী যে সপ্তাহে দুইদিন বা তার বেশি এই ফল খেতে বলা হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধ

ক্যান্সার যা একটি দুরারোগ্য রোগ, তা প্রতিরোধে কিউয়ি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় জানা গেছে, কিউয়ি ফলের রসে রয়েছে ওরাল ক্যান্সার প্রতিরোধ ক্ষমতা। ডিএনএ অক্সিডেটিভ কমাতে সাহায্য করে এই ফল। এতে উপস্থিত ভিটামিন সি মুক্ত মূলকের বিরুদ্ধে লড়ে। মুক্ত মূলকের বৃদ্ধি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ায়। কিউয়ি ফলে উপস্থিত ফাইবার ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াই করে, বিশেষ করে পরিপাক তন্ত্রের ক্যান্সার।

ত্বকের যত্নে

কিউয়ি খাওয়া শুধু স্বাস্থ্য নয় ত্বকের জন্যও খুব ভালো। কিউয়ি ফলের ভিটামিন সি সূর্যরশ্মি ও পরিবেশ দূষণের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বককে সজীব করে। যে কোনো রকম ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায় এবং ত্বককে সুন্দর করে করে। বয়সের ছাপ, বলিরেখা এই সব সমস্যার সমাধান করে ভিটামিন সি। দৈনন্দিন রূপচর্চায় ভিটামিন সি এখন অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। ভিটামিন-সি এর পাশাপাশি ভিটামিন ই ত্বককে মসৃণ করে এবং ত্বকের মান উন্নত করে। কিউয়ি থেকে প্রস্তুত ফেসপ্যাক, ক্রিম, বডি লোশন ত্বককে ভীষণ ভালো করে দেয়।

ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায়

ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে প্লেটলেট সংখ্যা হঠাৎ করেই কমতে থাকে, প্লেটলেট কাউন্ট বাড়াতে এই কিউয়ি ফল খুব উপকারী। কিউয়ি ফল খাওয়া তাই ডেঙ্গু রোগীদের পক্ষে খুব ভালো।

আরও পড়ুন : Disadvantages Of Drinking Cold Water ঠান্ডা জল পান করেন, তাহলে এই বিষয়গুলি জানা আপনার জন্য খুবই জরুরি

____

Published by Julekha Nasrin

SHARE
RELATED ARTICLES
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it

Most Popular