ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা
Benefits of Ghee
কলকাতা; গরম গরম ভাতের শরীর থেকে তখনও ধিক ধিক করে ধোয়াটা বেরোচ্ছে। আর ঠিক পাশেই পা ছড়িয়ে শুয়ে প্রমাণ সাইজের বেগুন ভাজাটা। আরে দাঁড়ান দাঁড়ান এখনই কী শুরু করবে, ঠাকুমার হাতে তৈরি ঘি আগে পাতে পরুক, তবে না শুরু হবে ভুরিভোজ। গরমের ছুটিতে রোজ দুপুর বেলা এইভাবেই খাওয়াতেন আমার ঠাকুমা। অনেকগুলো বছর কেটে গেছে। তবু ছোট বেলার সেই স্মৃতিগুলো যেন আজও অমলিন।
২১ শতকের স্বাস্থ্য সচেতন বাঙালিরা অনেকেই ঘি খেতে পছন্দ করেন না। পাছে ওজন বেড়ে যায়! সেই ভয়ে তারা যেমন ভাতের পরিমাণে দাঁড়ি টেনেছেন, তেমনি রোজের ডায়েট থাকে বাদ পরেছে ঘিও। কিন্তু আজব ব্যাপার হল, চিকিৎসা বিজ্ঞান কিন্তু অন্য কথা বলছে। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ঘি খাওয়ার সঙ্গে শরীর খারাপ হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। বরং মস্তিষ্ক থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত শরীরে একাধিক অঙ্গের সচলতা বৃদ্ধিতে ঘি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে।
ঘি-কে অনেক পুষ্টি ও ভিটামিনের উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যার সেবন শরীরের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করতে পারে। ঘি ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ। ঘিকে আয়ুর্বেদে পুনরুজ্জীবিতকারী উপাদান হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। Benefits of Ghee
জেনে নিন কেমনভাবে ঘি একাধিক শারীরিক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে থাকে
হজমের সমস্যায় উপকারী Benefits of Ghee
খালি পেটে ঘি খেলে হজম সংক্রান্ত ত্রুটি দূর হয়। যাদের প্রায়ই পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা থাকে তাদের জন্য ঘি খাওয়া সেরা ঘরোয়া প্রতিকার হতে পারে। এটিতে শক্তিশালী অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। ঘি বিউটরিক অ্যাসিডের একটি ভালো উৎস, যা অন্ত্রের দেয়ালকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন তারা ঘুমানোর আগে এক চামচ ঘি ও এক চিমটি হলুদ গরম দুধে মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
ঘি খাওয়া ওজন কমাতে সাহায্য করে। ঘি সাধারণত ওজন বৃদ্ধিকারী হিসাবে বিবেচিত হয়, কিন্তু আপনি কি জানেন যে ওজন কমানোর চেষ্টা করা লোকদের জন্য এটি একটি নিরাময় হতে পারে? অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞও গরুর দুধ থেকে তৈরি ঘি খাওয়ার পরামর্শ দেন। ঘি দুধের প্রোটিন সমৃদ্ধ, যাতে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড, ওমেগা-৩ এবং ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড, যা ওজন কমাতে সহায়ক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক
ঘি আমাদের রোগ ও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। আপনিও যদি প্রায়ই কাশি এবং সর্দির সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে ঘি খেলে এই সমস্যাগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। নাকে কয়েক ফোঁটা কুসুম গরম ঘি দিলে সর্দি, কাশি ও নাক বন্ধ হওয়ার সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়। এটি ঠান্ডাজনিত মাথাব্যথা উপশমেও সহায়ক। এছাড়াও ঘি ভিটামিন এ এবং সি এর একটি ভালো উৎস, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে।
ব্রেন টনিক হিসেবে কাজ করে Benefits of Ghee
নিউট্রিশনিস্টদের মতে নার্ভের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিকবাবে ব্রেন পাওয়ারের উন্নতিতে ঘি-এর কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। আসলে এত উপস্থিত ওমাগা- ৬ এবং ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড শরীর এবং মস্তিষ্ককে চাঙ্গা রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি প্রাকাশিত বেশ কিছু গবেষমায় দেখা গেছে এই দুই ধরনের ফ্যাটি অ্যাসিড ডিমেনশিয়া এবং অ্যালঝাইমারসের মতো রোগের প্রকোপ কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে
ঘিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে উপস্থিত ফ্রি রেডিকালদের ক্ষতি করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। ফলে কোষের বিন্যাসে পরিবর্তন হয়ে ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, আমাদের দেশে অনেকেই ঘি সহযোগে রান্না করে থাকেন। এই অভ্যাসও কিন্তু খারাপ নয়। কারণ ঘি-এর “স্মোকিং পয়েন্ট” খুব হাই। ফলে বেশি তাপমাত্রায় রান্না করলেও কোনও ক্ষতি হয় না।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে ঘি হল হল প্রকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা ত্বক এবং ঠোঁটের হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন অল্প পরিমাণ ঘি-এর সঙ্গে যদি সামান্য় জল মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন, তাহলে ত্বকের বয়স চোখে পরার মতো কমে।
Benefits of Ghee
আরও পড়ুন; Facemask For Glowing Face : উজ্জ্বল মুখের জন্য ফেসমাস্ক
আরও পড়ুন; Rice Paratha Recipe : বাড়িতে নতুন কিছু চেষ্টা করতে চান? তৈরি করুন ভাতের পরোটা
Publish by Abanti Roy