বুধবার বাংলার ঘরে ঘরে দেবী লক্ষ্মীর আরাধনায় মেতে উঠবেন সকলে। এদিন আবার দেবী লক্ষ্মীর সঙ্গে জ্ঞানের দেবী সরস্বতীরও আরাধনা হয়। অবাক হচ্ছেন? হাড়দা গ্রামে লক্ষ্মী-সরস্বতীর আরাধনা হয়ে আসছে ১৬২ বছর ধরে। পূর্বপুরুষের হাত ধরে শুরু হওয়া পুজো আজও তার ঐতিহ্যের ধরে রেখেছে।
লক্ষ্মী-সরস্বতীর একসঙ্গে পুজো
বিনপুর দু’নম্বর ব্লকের হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের হাড়দা গ্রামে সাহা ও মন্ডল পরিবারের উদ্যোগে এই পুজো হয়ে থাকে। তবে শুধুমাত্র পুজো বললে ভুল বলা হবে। প্রতি বছর দেবী লক্ষ্মীর আরাধনার জন্য, এই দিনটির অপেক্ষায় থাকেন এই গ্রামের আট থেকে আশি সকলেই। ৫ দিন ধরে চলে পুজো আর পুজোকে কেন্দ্র করে ৭ দিন ধরে আয়োজন করা হয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
পুজোর কমিটির সম্পাদক ভুবন মন্ডল বলেন,”বিষ্ণুপুরাণ মতে নারায়ণের দুই স্ত্রী রয়েছেন, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। তাই আমরা একজনকে ছেড়ে কিভাবে আরেকজনের পূজা করতে পারি? সে জন্যই আমাদের পূর্বপুরুষের শুরু করা পূজো আজও আমরা করে চলেছি। এই বছর আমাদের পুজো ১৬২তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। পুজোকে কেন্দ্র করে আমরা আনন্দে মেতে উঠি। আমাদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আত্মীয়-স্বজনরা আসেন পাঁচ দিন ধরে বাড়িতে থাকেন, জমিয়ে খাওয়া দাওয়া এবং পুজোর আনন্দ উপভোগ করি আমরা সবাই মিলে। পুজোকে কেন্দ্র করে সাত দিন ধরে চলে নামিদামি শিল্পীদের নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও যাত্রা”।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2024: ৩০০ বছরের প্রাচীন নদিয়ার নবদ্বীপের কংসবণিক পরিবারের দুর্গাপুজো
এখানে ১৬অক্টোবর থেকে লক্ষ্মীপূজা শুরু হবে চলবে ২০অক্টোবর পর্যন্ত। লক্ষ্মী পূজার প্রাঙ্গণে কেবলমাত্র একটি জিলিপির দোকান থাকে। নিলামের মাধ্যমে সেই দোকান নিতে হয় ব্যবসায়ীকে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এই বছর ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকায় নিলাম পেয়েছে হাড়দা গ্রামেরই এক ব্যক্তি। চালগুড়ি দিয়ে তৈরি করা হয় এই জিলিপি। জিলিপির স্বাদ সবার থেকে আলাদা। প্রতিবছর ২৫০ থেকে ৩০০ কুইন্টাল জিলিপি বিক্রি হয় এখানে।
হাড়দা লক্ষ্মীপূজো দেখার জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার বহু মানুষ সের সমাগম হয়।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, তাদের এবারের পুজোর বাজেট প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা। হাড়দা গ্রামের বসবাস করি ৫০০টি সাহা-মন্ডল পরিবারের থেকেই এই চাঁদা দেওয়া হয়। বাইরের কারও কাছ থেকে কোন প্রকার চাঁদা আদায় করা হয় না। জমির উপর, পেশার উপর চাঁদা ধার্য করা হয় নিজেদের সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে। পুজোর ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিনপুর থানার পুলিশ। এই পুজো দেখার জন্য বহু পর্যটক আসেন বলেও জানা গিয়েছে।