নীলিমা সারগোধা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা,Multiply the health of green tomatoes এক সময় শীতকালে টমেটোর বেশি আকর্ষণ ছিল। এখন সারাবছরই টমেটো পাওয়া যায় বলে সেই আকর্ষণ অনেকটাই কমে গেছে। তবে অনেকের ধারণা শীতকালে টমেটোর যে স্বাদ পাওয়া যায়, সেই স্বাদ অন্য সময় পাওয়া যায় না। আবার শীতের শুরুতে পাকা টমেটো সম্পর্কে অনেকের রয়েছে সন্দেহ। কেননা কাঁচা টমেটো পাকানো হয় রাসায়নিক দিয়ে।
টমেটো খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এই কারণে, লোকেরা টমেটো শুধুমাত্র সবজির আকারে নয়, স্যুপ, জুস এবং স্যালাড আকারেও খায়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনি নিশ্চয়ই লাল টমেটোর উপকারিতার কথা শুনেছেন। কিন্তু কাঁচা টমেটো নামে পরিচিত সবুজ টমেটোর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন কি?
বিশেষজ্ঞদের মতে,কাঁচা ও সবুজ টমেটোতে টমাটিডিন নামের উপাদানের পরিমাণ পাকা টমেটোর চেয়ে বেশি। টমাটিডিন মাংসপেশির সামর্থ্য বাড়ায়, হাড়কে সবল ও সুস্থ রাখে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাঁচা টমেটোতে ভিটামিন সি এবং ই-এর পরিমাণও বেশি। তাহলে সবুজ টমেটোকে কাঁচা ও অকেজো হিসেবে ফেলে না দিয়ে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারেন।
স্বাস্থ্যের জন্য সবুজ টমেটো খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানুন
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে
সবুজ টমেটো ভিটামিন সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। সবুজ টমেটো খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। যার কারণে তাড়াতাড়ি অসুস্থ হওয়া বা যেকোনো ধরনের সংক্রমণের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়।
২. রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না
সবুজ টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে পাওয়া যায়। সবুজ টমেটো খেলে রক্ত জমাট বাঁধে না। কারণ সবুজ টমেটো রক্ত জমাট বাঁধা স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে।
৩. চোখের জন্য উপকারি
সবুজ টমেটো খাওয়া চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী বলে মনে করা হয়। আসলে সবুজ টমেটো বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ। তাই সবুজ টমেটো খাওয়া চোখের স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো।
৪. রক্তচাপের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে
সবুজ টমেটো রক্তচাপ কমাতেও অনেক সাহায্য করে। যাদের রক্তচাপ খুব বেশি তাদের জন্য সবুজ টমেটো খাওয়া খুবই উপকারী। কারণ সবুজ টমেটোতে সোডিয়াম কম এবং পটাশিয়াম বেশি।
৫. ত্বকের জন্য উপকারি
সবুজ টমেটো ত্বকের জন্যও উপকারী। কারণ এগুলো খাওয়া বার্ধক্যের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। আসলে সবুজ টমেটোতে ভিটামিন সি খুব ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। যার কারণে ত্বকের কোষ তৈরি হয় এবং বলিরেখা কমে যায়।
৬. ক্যান্সার রোধ করে
টমেটোতে থাকা লাইকোপেন প্রস্টেট, কলোরেকটাল এবং স্টমাক ক্যান্সাররোধে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। লাইকোপেন হল একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা কোষের বিভাজন ঠিকমতো হতে সাহায্য করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ক্যান্সার সেলের জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে। আর যদি একবার ক্যান্সার কোষ জন্ম নিয়েও নেয়, তাহলে তার বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে না হয়, সেদিকে টমেটো খেয়াল রাখে।
৭. কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে
কাঁচা টমেটোয় থাকা ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। ফলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, যাদের পরিবারে হাই কোলেস্টেরল এবং ব্লাড প্রেসার রোগের ইতিহাস রয়েছে তারা আজ থেকেই কাঁচা টমেটো খাওয়া শুরু করুন।
৮. চুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে
চুলের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে ভিটামিন-এ-এর কোনো বিকল্প হয় না বললেই চলে। আর এই উপাদানটি প্রচুর মাত্রায় রয়েছে কাঁচা টমেটোতে। তাই দীর্ঘদিন যদি চুলকে সুন্দর রাখতে চান, তাহলে কাঁচা টমেটো রাখুন খাবারে।
৯. হাড় শক্ত করে
ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন-কে সমৃদ্ধি হওয়ার কারণে হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে কাঁচা টমেটোর কোনও বিকল্প নেই। তাই তো বুড়ো বয়সে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগের হাত থেকে বাঁচতে এখন থেকেই কাঁচা টমেটো খাওয়া শুরু করুন।
১০. ধূমপানের ক্ষতি থেকে বাঁচায়
কাঁচা টমেটোয় রয়েছে কিউমেরিক এবং ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা কার্সিনোজের প্রভাব থেকে শরীরকে রক্ষা করে। ফলে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পায়। তাই যারা একান্তই ধূমপান ছাড়তে পারছেন না, তারা দয়া করে দিনে ২-৩ টা কাঁচা টমেটো খাওয়া শুরু করুন।
আরও পড়ুন : মুখে অবাঞ্ছিত লোমের কারণ ও প্রতিকার