সঞ্জিত সেন, পূর্ব বর্ধমান, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : Story of mentally unbalanced in Bhatar পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের হরিবাটি গ্রামের বাসিন্দা শেখ নিজাম আলি। বয়স ৫৪ বছর। ২০ বছর ধরে এক চিলতে বাড়ির একটি ছোট ঘরে বন্দিদশায় দিন কাটাচ্ছেন তিনি। ঘরের মধ্যে না আছে বিছানার ব্যবস্থা, না আছে আলো। বাড়ির মধ্যেই প্রাতঃকৃত্যও সারেন তিনি। সারা শরীরজুড়ে নোংরার পুরু আস্তরণ পড়ে গেছে। মলমূত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে গোটা ঘরের ভিতরে। বাড়ির মেঝের মাটিতে গর্ত করেছে সে নিজে হাতে।
মুখে একগাল দাড়ি। দীর্ঘদিন দাড়ি না কামানোয় বেশ বড় হয়েছে। কতদিন আগে তাঁর শরীর পরিষ্কার হয়েছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না। ২০ বছর আগেই তাঁর শেষ চিকিৎসা হয়েছে। তারপর পয়সার অভাবে আর শেখ নিজাম আলির আর চিকিৎসা হয়নি। এক চিলতে ঘরের মধ্যেই তাঁর জীবন। এ এক অন্য মর্মান্তিক দৃশ্য!
২০ বছর আগেই শেষ চিকিৎসা হয়েছে শেখ নিজাম আলির Story of mentally unbalanced in Bhatar
প্রতিবেশীরা জানান, একসময় নিজাম সুন্দর চেহারার ছেলে ছিল। শরীরের প্রতি যত্ন ছিল তাঁর যথেষ্ট। উচ্চমাধ্যমিকে সে ভালো রেজাল্ট করে। বছর ২৩ আগে তাঁর বিয়ে হয় সালেহা বিবির সঙ্গে। কিন্তু হঠাৎ করে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন নিজাম। আস্তে আস্তে হারিয়ে ফেলেন মানসিক ভারসাম্য। নিজাম-সালেহার একটি মেয়েও রয়েছেন। তাঁর অবশ্য বিয়ে হয়ে গেছে এখন।
স্ত্রী সালেহা বিবি জানান, বিয়ের পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে আমার স্বামী। অল্প কিছু জমি অন্যকে ভাগে দিয়ে কোনও রকমে মেয়েকে মানুষ করি। মেয়ের বিয়ের সময় সেই জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। অন্যের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে সংসার চলে। পয়সার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারিনি। বাড়িতে ছেলে না থাকায় পাড়া-প্রতিবেশীদের ডেকে বছরে কয়েকবার স্নান করাতে হয়। অন্যান্য খাবার খেলেও দীর্ঘ ১০ বছর জল পান করেননি নিজাম আলি।
—–
Published by Subhasish Mandal