Affect and Disaffect of Green tea গ্ৰিন-টি-র উপকারিতা – অপকারিতা
সুমন তিওয়ারি, নয়াদিল্লি, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: গ্রিন টি খেলেই রোগা হওয়া যায়। এই জাতীয় একটা কথা চালু রয়েছে।কিন্তু গ্রিন টি কীভাবে খাওয়া উচিত, এতে কী কী উপকার তা নিয়ে স্পষ্ট ধারণা অনেকেরই নেই। অতিরিক্ত গ্রীন টি যেমন পান করা ঠিক না, তেমনই আবার খালি পেটে ঘুম থেকে উঠেই গ্রীন টি, কিংবা রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গ্রিন টি পান করাও মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
আমেরিকান জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র বলছে, অন্যান্য চায়ের মতো গ্রীন টি আমাদের শরীরে জারিত হয় না। তাই এই চা অন্য চায়ের তুলনায় স্বাস্থ্যকর। কিন্তু গ্রিন টি-র উপকারিতা থাকলে কোথাও না কোথাও অপকারিতাও রয়েছে।
গ্ৰিন টি- র উপকারিতা
• গ্রিন টি’র পলিফেনল শরীরের ফ্যাট অক্সিডেশন প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে খাবার থেকে ক্যালোরি তৈরির প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, এটি এক দিনে ৭০ ক্যালোরি পর্যন্ত ফ্যাট বার্ন করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নিয়মিত গ্রিন টি খেতে পারলে বছরে ৭ পাওন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।
• গ্রিন টি রক্তের গ্লুকোজ-এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গ্রিণ টি প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করে। তাই এটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে খুবই কার্যকরী।
• হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি খুবই কার্যকরী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রীন টি শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, গ্রীন টি রক্ত জমাট বাধতে দেয় না। পাশাপাশি, গ্রীন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই কমে যায়।
• দাঁত ভালো রাখতে হলে গ্রিন টি খেতে পারেন। কারণ, গ্রিন টি’র ‘ক্যাটেকাইন’ নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট মুখের ভিতরের ব্যাকটেরিয়াকে বাড়তে দেয় না। যার ফলে গলার সংক্রমণ-সহ দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। নিয়মিত গ্রিন টি খেলে তা মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
• অবসাদ বা ডিপ্রেশন দূর করতে গ্রিন টি খুবই কার্যকরী। চা পাতায় ‘থিয়ানিন’ নামের অ্যামাইনো এসিড থাকে। এই উপাদান অবসাদ কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত গ্রীন টি পান করলে অবসাদ থেকে দ্রুত মুক্তি পাওয়া।
• শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে গ্রিন টি। এতে কেটেচিন নামের একটি উপাদান থাকে এবং এটি ভিটামিন ই ও সির থেকেও বেশি শক্তিশালী। তাই গ্রিন টি খেলে তা শরীরে প্রবেশ করে অনেক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার পাশপাশি বিভিন্ন উপকার করে।
• গ্রিন টি অ্যালার্জির সমস্যা সমাধানে অনেক উপকারী। এ ছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, হার্টঅ্যাটাকের সম্ভাবনা কমানো, ক্যানসার প্রতিরোধ, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে গ্রিন টি।আপনি দুধ এবং চিনি মিশিয়ে খেতে পারেন গ্রিন টি দুধ ও ও চিনি মিশিয়েও পান করা এই চা। কিন্তু দুধের প্রোটিনগুলি সবুজ চায়ের উপকারী উদ্ভিদ যৌগগুলির (ফ্ল্যাভোনয়েড) সাথে আবদ্ধ হয়, যা শরীরের পক্ষে ফ্ল্যাভোনয়েডগুলি শোষণ করা কঠিন করে তোলে। এতে শরীরের ওজন কমানোর ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত হয়।
কখন গ্রিন টি পান করা উচিত নয়
• গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের গ্রীন টি পান করা উচিত নয়।
• দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের দেবেন না।
• যাদের কিডনি রোগ, হৃদরোগ এবং আলসারের সমস্যা আছে তাদেরও দূরে থাকতে হবে।
• যাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা রয়েছে তাদেরও গ্রীন টি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
• গ্লুকোমা, লিভারের, অস্টিওপোরোসিস, রক্তাল্পতা এবং ডায়াবেটিস রোগীদের এড়ানো উচিত।
• সকালে খালি পেটে এটি পান করবেন না। দিনে মাত্র একবার পান করুন।
গ্রিন টি এর অপকারিতা
১. আপনার যদি অ্যালার্জি থাকে , তবে এই চা পান করার সাথে সাথে আপনার মুখের মধ্যে একটি খিঁচুনি বা চুলকানি অনুভব করবেন। ঠোঁট, গলা, জিহ্বা বা মুখ ফুলে যেতে পারে।
২. পেট খারাপ হলে তবে আপনি এটি খালি পেটে এই চা পান করতে পারেন। দুই থেকে তিন কাপের বেশি গ্রিন টি পান করলে জলশূন্যতা দূর হতে পারে।
আরও পড়ুন : বাচ্চাদের সহজে স্যালাড খাওয়ানোর টিপস