Thursday, November 21, 2024
Homeরাজ্যউত্তর ২৪ পরগণাVictims did not get Central Help শববাহী গাড়ি দুর্ঘটনায় এখনও মেলেনি কেন্দ্রীয়...

Victims did not get Central Help শববাহী গাড়ি দুর্ঘটনায় এখনও মেলেনি কেন্দ্রীয় সাহায্য! ক্ষোভ বাড়ছে বাগদার পারমাদনে

সোমনাথ মজুমদার, বনগাঁ, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : ভয়াবহ সেই দিনটির কথা এখনও ভুলতে পারেননি সেদিন প্রাণ হাতে করে ফিরে আসা মানুষগুলি! এখনও বেশিরভাগ আহতরা বিছানায় শুয়ে দিন কাটাচ্ছেন, কারও স্বামীর মৃত্যুর পর সংসার চলছে না, অভিশপ্ত সেই গাড়ি দুর্ঘটনায় কারও কোমর ভেঙেছে, কারও ভেঙেছে পাঁজর! ঘটনার পর কেটে গেছে প্রায় দুমাস। গত নভেম্বরের ২৭ তারিখ উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার পারমাদন থেকে মৃতদেহ নিয়ে নবদ্বীপ শ্মশানের উদ্দেশে যাত্রা করেন প্রায় ৪০ জন শ্মশানযাত্রী। নদিয়ার হাঁসখালি থানার ফুলবাড়ি এলাকায় পাথরবোঝাই ট্রাকের সাথে ধাক্কা মারে শববাহী গাড়িটি। ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৭ জনের, বাকিরা গুরুতর আহত হন। এযাবতকালের এত বড় ভয়াবহ দুর্ঘটনা গোটা রাজ্যে তো বটেই, এমনকী গোটা দেশেও ঘটেছে বলে মনে করতে পারেন না কেউ!

রাজ্য সরকার দু লক্ষ টাকা দিলেও পাওয়া যায়নি কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা Victims did not get Central Help

ঘটনার পর দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুরু করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারের শোক জ্ঞাপন করেন। মৃতদেহ সৎকারের জন্য ঘটনার পরদিন মৃতদের পরিবারের হাতে দু লক্ষ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সকাল থেকেই গ্রামে হাজির থেকে গোটা ঘটনার তদারকি করেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস৷ এরপর ঘটনার কয়েকদিন পর বাগদার গ্রামে যান বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর| স্থানীয়দের দাবি, গ্রামে গিয়ে সাংসদ-মন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসেন মৃতদের দু’লক্ষ টাকা করে ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আহত গ্রামবাসীদের দাবি, প্রায় দুমাস হতে চলল আর কেউ খোঁজ নেয় না। শান্তনু ঠাকুরের দেওয়া সরকারি সাহায্যের প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। টাকা পাননি কেউ!

মৃত্যু হয় ১৭ জন শ্মশানযাত্রীর, আহত হন একাধিক Victims did not get Central Help

আরও পড়ুন : Mothabari Roof Garden আপেল থেকে কুল, গাঁদা থেকে পাহাড়ি ফুল! মোথাবাড়ির সেন্টুর ছাদবাগান আজ মুখে মুখে

এ বিষয়ে সেই দুর্ঘটনায় পড়া এক বাসিন্দা বাদল সরকার বলেন, ‘কয়েকদিন হল একটু নড়াচড়া করতে পারি। বাড়ির লোকেরা ধরে বাইরে নিয়ে যায়। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলাম আমি। আজ আমি শয্যাশায়ী! কীভাবে সংসার চলবে জানিনা। প্রতিশ্রুতি মতো সরকারের টাকাটা পেলে উপকার হত৷’ দুর্ঘটনায় বাবাকে হারানো দেবাশিস মণ্ডল বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর সকলেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অনেক নেতামন্ত্রী এসেছিল গ্রামে। রাজ্য সরকারের দেওয়া টাকা ছাড়া আর কোনও টাকা আমরা পাইনি৷’ সেদিনের দুর্ঘটনায় স্বামীকে হারিয়েছেন শ্যামলি বিশ্বাস। শ্যামলী বলেন, ‘স্বামীর মৃত্যুর পর আর দিন চলছে না। সরকারের দেওয়া রেশন থেকে যা পাই তা দিয়ে কোনওমতে সংসার চলে। ছেলের একটা কাজ হলে সংসারটা বেঁচে যেত৷’

এ বিষয়ে প্রসেনজিৎ মুহুরি বলেন, ‘ঠাকুমার দেহ সৎকার করতে যাবার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। ১৭ জন মারা যায়। বাকিরা এখনও বিছানায় শয্যাশায়ী। পঞ্চায়েত ও গ্রামবাসীরা কিছু কিছু করে সাহায্য করেছেন কিন্তু তাঁরাও আর পেরে উঠছেন না৷’ স্থানীয় গ্রামবাসী টিংকু নন্দী বলেন, ‘আমাদের সহযোগিতা করতে করতে পিঠ ঠেকে গেছে। এমন অবস্থা অনেকেরই চিকিৎসা করানোর মতো পয়সা নেই৷’

‘বিষয়টি নিয়ে সাংসদ ও দলের সাথে কথা বলব’ Victims did not get Central Help

বিষয়টি জানার পর বিজেপির সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। টাকা গ্রামবাসীরা পাবেনই। তবে এখনও সেই টাকা না পাওয়ার বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম। আমি আজই বিষয়টি নিয়ে সাংসদ ও দলের সাথে কথা বলব৷’ এদিকে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর দিনই মৃতদের দু লক্ষ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে। ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর ওই গ্রামে যান স্থানীয় সাংসদ। কিছু সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়ে আসেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতি এখনও তিনি পূরণ করতে পারেননি। আমি বলতে চাই এভাবে মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক নয়।’

তবে রাজনীতির কূটকচালি নয়, দ্রুত মিলুক সরকারি সাহায্য। পূরণ হোক প্রতিশ্রুতি। সেদিকেই তাকিয়ে বাগদার পারমাদন গ্রামের অসহায় মানুষগুলো।

—–
Published by Subhasish Mandal

SHARE
RELATED ARTICLES
Html code here! Replace this with any non empty raw html code and that's it

Most Popular