অমিত সরকার, কোচবিহার, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা : রসিকবিল বনাঞ্চল সংলগ্ন পাগলিরকুঠির পাগলিধামে শুরু হল আদিবাসী সম্প্রদায়ের উনিশ দেবতার পুজো উৎসব। মূলত বনবস্তির রাভা সম্প্রদায়ের মানুষজন এই পুজো উৎসবের শুরু করে। রাভা সম্প্রদায়ের মানুষেরা এই পুজোর সূচনা করলেও বর্তমানে গ্রামের সমস্ত মানুষই পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। আশপাশের সমস্ত গ্রাম অঞ্চল থেকে মানুষেরা মানত করতে ওই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। এই পাগলিধামে উনিশটি দেবতার মধ্যে যেমন রয়েছে কালী, শিব, মাসান, পাগলা, পাগলি, কালসুর, কামসুর তেমনি রয়েছে মুসলিম সম্প্রদায়ের পাগলাপিরের মূর্তি। সব মিলিয়ে প্রায় সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতীক হিসেবে উনিশটি দেবতার মূর্তি সাত দিন ধরেই পূজিত হবেন পাগলিধামে, জানালেন পুজো কমিটির সহ-সম্পাদক কান্তেশ্বর রাভা।
তিনি আরও জানান, ১৯৬০ সালে বাবুই রাভা, দুর্লভ রাভা এবং কাশীনাথ রাভা প্রমুখেরা তান্ত্রিক মতে প্রথম এই পূজোর শুরু করেন। প্রথমে এই পুজোয় কোনও দেবতার মূর্তি ছিল না। উনিশটি দেবতার প্রতীক হিসেবে উনিশটি বাঁশকে পুজো করা হত। পরবর্তীতে তাঁদের অনুপস্থিতিতে তান্ত্রিক না পাওয়ায় পুরোহিত মতে উনিশটি দেবতার মূর্তি তৈরি করে পুজো করা শুরু হয়।
বনবস্তির রাভা সম্প্রদায়ের মানুষজন উনিশ দেবতার পুজো শুরু করেন Worship of Tribal Community
আরও পড়ুন : Folk culture of Bengal পরম্পরা মেনে আজও কৃষ্ণগঞ্জে বেঁচে বাংলার লোকসংস্কৃতি হোলবোল গান
রবিবার থেকে এই পূজার সূচনা হল। চলবে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। সাত দিন ধরে উনিশটি বাঁশকে সাজিয়ে বাজনা-সহ ৫০ জনের একটি দল সাতটি গ্রামে ঘুরে মাগন তুলবে। ২৯ জানুয়ারি শেষ দিনে পুজোর অঙ্গ হিসেবে সেখানে পাঠা, পায়রা, হাঁস বলি দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে একটি ভেলায় করে ওই উনিশটি বাঁশের সঙ্গে একটি জ্যান্ত ছাগল বেঁধে তা রায়ডাক নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। সেই উপলক্ষে প্রতিবছর পাগলিধাম এলাকায় একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এদিন, বাঁশ নৃত্যের মধ্য দিয়ে পুজোর সূচনা হয়। পুজো শেষে প্রসাদ খেয়ে সুসজ্জিত পোশাকে ৫০ জনের একটি দল বাঁশ কাঁধে নিয়ে বাজনা নিয়ে মাগনের উদ্দেশে বের হন। উল্লেখ্য যে পাগলিরকুঠি গ্রামের নাম হয়েছে পাগলিধাম থেকেই।
—–
Published by Subhasish Mandal