সৌম্য প্রামাণিক, পূর্ব মেদিনীপুর, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: ভ্রমণপিপাসু মানুষজনের অন্যতম ডেস্টিনেশন সৈকত শহর দিঘা। আর সেই দিঘার অন্যতম অঙ্গ হল সি-বিচে ঘোড়দৌঁড়। কিন্তু এবার থেকে দিঘার সৈকতে আর দেখা যাবে না ঘোড়া। এমনটাই নির্দেশ জারি করা হয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তরফ থেকে। ঘোড়ার খুরের দাপটে নষ্ট হচ্ছে বালিয়াড়ি এবং বিষ্ঠায় বাড়ছে দূষণ। তাই এবার থেকে দিঘায় সম্পূর্ণরূপে ঘোড়া ব্যবসা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল উন্নয়ন পর্ষদ। পাল্টা আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ঘোড়া ব্যবসায়ীরা। বিকল্প কর্মসংস্থান খুঁজে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা।
দিঘার সৈকতে প্রায় ১৫০-২০০ জন মানুষ ঘোড়া কারবারের সঙ্গে যুক্ত Horses are forbidden on Digha beach
দীর্ঘ করোনা লকডাউন আবহে পর্যটন ব্যবসা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত বলা চলে। ফলে ঘোড়া কারবারিরা ঘোড়ার দানাপানি যোগাতে একপ্রকার হিমশিম খেয়ে যাচ্ছেন। ফলে নিজেদের আস্তাবল থেকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে ঘোড়াদের। এরই মাঝে নয়া নির্দেশ জারি করল দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। পর্ষদের দাবি, ঘোড়ার পায়ের খুরের দাপটে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বালিয়াড়ি। এছাড়াও ঘোড়ার বিষ্ঠায় ছড়াচ্ছে দূষণ। এমনকী সৈকতের জলে মিশে গিয়ে পর্যটকদের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে তা। তাই এবার থেকে দিঘায় বন্ধ ঘোড়া ব্যবসা। বৃহস্পতিবার এই ধরনের নির্দেশ জারি করার পরেই একপ্রকার কপালে ভাঁজ পড়েছে ঘোড়া ব্যবসায়ীদের। বালিয়াড়ি থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সমস্ত ঘোড়া। এর আগেও এই ধরনের নির্দেশ জারি করেছিল প্রশাসন। কিন্তু ঘোড়া ব্যবসায়ীদের আন্দোলনের ফলে সৈকতে ঘোড়দৌঁড় টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন তাঁরা। তাই প্রশাসনের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবারও আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। দিঘার সৈকতে প্রায় ১৫০-২০০ জন মানুষ এই ঘোড়া কারবারের সঙ্গে যুক্ত। বংশানুক্রমে ব্যবসা করে আসছেন তাঁরা। ঘোড়া ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেলে কী করবেন তা নিয়ে চিন্তিত এখন তারা।
ঘোড়া ব্যবসায়ী শেখ আজিজুল বলেন, ‘ঘোড়া ব্যবসা না হলে আমরা এখন কী করব? প্রশাসন তাহলে আমাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিক। না হলে আমরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।’
দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল জানান, ‘ঘোড়ার বিষ্ঠা প্রচণ্ড সাংঘাতিক। সেই সমস্ত বিষ্ঠা জলে মিশে গিয়ে পর্যটকদের গায়ে লাগছে। এছাড়াও ঘোড়ার খুরে বিচ সংলগ্ন রাস্তায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেই কারণে আমরা দিঘা পর্যটনকেন্দ্রে ঘোড়া ব্যবসা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
—–
Published by Subhasish Mandal