রণজিৎ দাস, মালদা, ইন্ডিয়া নিউজ বাংলা: পার্টির নির্দেশকে অমান্য করে মানিকচকজুড়ে চলছে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধানকে বরখাস্তের রমরমা বাজার। পুরনো প্রধান ও উপপ্রধানকে সরিয়ে নিজের পছন্দমতো সদস্যকে প্রধানের আসনে বসানোর প্রক্রিয়া। বারবার তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব বা ব্লক নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে কোনও প্রধান বা উপপ্রধানকে বরখাস্ত করা যাবে না। তবুও জেলা ও ব্লক নেতৃত্বের নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে বরখাস্তের এই খেলা।
তৃণমূল ব্লক সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্রের নির্দেশকে উপেক্ষা No-confidence vote in Mathurapur Panchayat of Malda
গত পয়লা জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভা থেকে মানিকচকের বিধায়ক তথা তৃণমূল ব্লক সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বিভিন্ন অঞ্চল নেতৃত্বকে একেবারে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন বিজেপির হাত ধরে কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপসারণে তৃণমূল কোনও ভূমিকা নেবে না। যদি এমনটা হয় তবে সেইসব নেতৃত্বকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে বলেও হুইপ জারি করেন তিনি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ও পার্টির সদস্যকে বহিষ্কারও করেন তিনি। কড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তৃণমূলের এক গোষ্ঠীর নেতৃত্বদের যোগসাজশে চলছে প্রধান অপসারণের কাজ। বিজেপির দাবি, বিধায়কের হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তাঁরই এক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়ের অঙ্গুলিহেলনে বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ও পরবর্তীতে বরখাস্তের মিছিল অব্যাহত।
তৃণমূলের বিরুদ্ধে তৃণমূল, আবার কোথাও বিজেপির প্রধানকে বরখাস্তের লড়াই জারি শাসকদলে। এবার বিজেপি প্রধান ও উপপ্রধানকে বরখাস্ত করল তৃণমূল। তাও আবার বিজেপি সদস্যের হাত ধরে। মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি পরিচালিত প্রধান মিলন মণ্ডল ও উপপ্রধান উত্তম কর্মকারকে বরখাস্ত করল ১৩ জন সদস্য। উল্লেখ্য গত ৩০ ডিসেম্বর বিজেপি পরিচালিত মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ করেন মোট ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১১ জন সদস্য। তৃণমূলের চারজন, বিজেপির চারজন, কংগ্রেসের একজন ও সিপিএমের সিপিএমের দুইজন সদস্য প্রধান ও উপপ্রধানের অপসারণের পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন। সোমবার ছিল প্রধান, উপপ্রধানকে অপসারণের দিন। প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে ১১ জন সদস্য অনাস্থা পেশ করলেও অপসারণের দিন হাজির ছিল আরও দুইজন সদস্য। কংগ্রেসের একজন ও নির্দলের একজন সদস্য প্রধান ও উপপ্রধানের অপসারণের পক্ষে ভোট দেন। ফলে মোট ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৩ জন সদস্য প্রধান, উপপ্রধানকে অপসারণের পক্ষে হাজির হন। তৃণমূলের দাবি উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রধান ও উপপ্রধানকে অপসারণ করে শাসকদলের প্রধান নিযুক্ত করা হবে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসের নির্বাচিত সদস্যরা তৃণমূলে যোগদান করে প্রধান নির্বাচিত করবেন। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি তাঁদের চারজন পঞ্চায়েত সদস্যকে একপ্রকার হাইজ্যাক করেছে তৃণমূল।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৯টি আসনের মধ্যে বিজেপি দশটি, তৃণমূল চারটি, সিপিএম দুটি, কংগ্রেস দুটি এবং নির্দল একটি আসন দখল করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মথুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বোর্ড দখল করে বিজেপি। প্রধান নির্বাচিত হন মিলন মণ্ডল। উত্তম কর্মকার উপপ্রধানের দায়িত্ব পান। ইতিমধ্যেই বিজেপির একজন সদস্যের মৃত্যুতে বিজেপির সদস্যপদ সংখ্যা বর্তমানে ৯।
—–
Published by Subhasish Mandal